ফাইল চিত্র।
রেণু খাতুনের হাত কেটে নেওয়ায় অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ শেখ-সহ ধৃত চার জনকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবেন তদন্তকারীরা। বুধবার ওই চার জনকেই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া আদালতে তোলা হয়। তাদের সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। তবে ধৃতদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, রেণু খাতুনের মামলায় ধৃত সরিফুল শেখ ওরফে শের মহম্মদ শেখ, চাঁদ মহম্মদ শেখ ওরফে হিল্লাল, আসরফ আলি শেখ এবং হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিবকে নিয়ে মামলার পুনর্নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি, ঘটনার সময় এবং তার আগে অভিযুক্তরা যে মোবাইল ফোনগুলি ব্যবহার করেছিল, সেগুলি উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে ধৃতদের জেরা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের মেয়ে রেণু খাতুনের সঙ্গে কোজলসার সরিফুল শেখের বিয়ে হয়। আজিজুলের দাবি, মেয়ের বিয়েতে তিনি নগদ ১ লক্ষ টাকা, ৮ ভরি সোনার গহনা-সহ অন্যান্য সামগ্রী যৌতুক দিয়েছিলেন। তার পরেও সরিফুল এবং তার পরিবারের লোকজন অতিরিক্ত পণের দাবিতে রেণুর ওপর নির্যাতন চালাত।
নার্সিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রেণু একাধিক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার পর সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নার্স পদে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সেই চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, তাতে আপত্তি জানিয়ে আসছিল সরিফুল। সরিফুলের ধারণা ছিল, স্ত্রী সরকারি চাকরিতে গেলে তাকে ছেড়ে চলে যাবেন। অভিযোগ, সে জন্য রেণুর ডান হাতের কব্জি থেকে কেটে নেয় সে।
৪ জুন রাতে ওই ঘটনার পরের দিন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন রেণুর বাবা আজিজুল হক। অভিযোগ পাওয়ার পর দু’দিনের মধ্যেই সরিফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় আসরফ আলি শেখ এবং হাবিবুর রহমানকে। গ্রেফতার করা হয় ঘটনার ‘অন্যতম চক্রী’ সরিফুলের মাসতুতো ভাই চাঁদ মহম্মদকেও। এর পর ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে একটি টাটা সুমো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে যে ঘটনার দিন আসরফ আলি, হাবিবুর এবং চাঁদ মহম্মদকে তালগ্রাম থেকে স্কুটিতে চাপিয়ে নিয়ে এসেছিল সরিফুল। পুলিশের দাবি, কাজ হাসিল করে একটি টাটা সুমোতে চেপে তারা ফিরে গিয়েছিল। ওই টাটা সুমোটিই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, রক্তমাখা পোশাক, বিছানার চাদর এবং হাত কাটার কাজে ব্যবহৃত কাটারিটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার সময় কয়েকটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল অভিযুক্তরা। সেগুলি লুকিয়ে রেখেছে তারা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই মোবাইল ফোনগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।