Chittaranjan Locomotive Works

উৎপাদনে ‘রেকর্ড’ কারখানার, ‘ট্রায়াল’-এর অপেক্ষায় দু’শো কিমির ইঞ্জিন

একটি অর্থবর্ষে বিশ্বের সর্বাধিক রেল ইঞ্জিন উৎপাদনকারী সংস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই ‘সাফল্য’ মিলেছে বলে দাবি ‘চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস’-এর (সিএলডব্লিউ)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০১:৩৩
Share:

চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কর্স। ফাইল চিত্র

একটি অর্থবর্ষে বিশ্বের সর্বাধিক রেল ইঞ্জিন উৎপাদনকারী সংস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই ‘সাফল্য’ মিলেছে বলে দাবি ‘চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস’-এর (সিএলডব্লিউ)। এ বার আগামী অর্থবর্ষে প্রতি ঘণ্টায় দু’শো কিলোমিটার গতির ইঞ্জিনের ‘ট্রায়াল রান’ হবে বলে জানালেন সংস্থার কর্তারা। পাশাপাশি, আরও কিছু অত্যাধুনিক ইঞ্জিন বানানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। সংস্থার এই ‘সাফল্যের’ মাঝেও সিটু এবং আইএনটিইউসি সংস্থাকে বেসরকারিকরণের তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

সংস্থা কর্তৃক্ষ জানান, গত অর্থবর্ষে তাঁদের দেশের সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন বানানোর নির্দেশ দেয় রেলবোর্ড। সেই মতো প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সক্ষম ইঞ্জিন তৈরি করে ‘ট্রায়াল রান’-এ পাঠানো হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ইঞ্জিনের গতি ও গুণমান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের কর্তারা। এ বার প্রস্তাব এসেছে দু’শো কিলোমিটার গতির ইঞ্জিন তৈরির। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ বলেন, ‘‘দু’শো কিলোমিটার গতির ইঞ্জিনটি ট্রায়াল রানের অপেক্ষায় রয়েছে।’’ কর্তৃপক্ষ জানান, রাজধানী, শতাব্দী, দূরন্তের মতো উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেন চালানো হবে এই ইঞ্জিনে। দেশে এই মুহূর্তে এই গতির ইঞ্জিন নেই। তাই যে রেললাইনের উপরে এটির ‘ট্রায়াল রান’ হবে সেই লাইনটিকেও বিশেষ ভাবে বানানো হচ্ছে। সে কাজ হলেই ‘ট্রায়াল রান’-এ পাঠানো হবে। মন্তার সিংহের দাবি, ‘‘চলতি অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত ৪০২টি ইঞ্জিন তৈরি করেছে সংস্থা। এর আগে বিশ্বের কোনও ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী সংস্থা এ কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেনি।’’

সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা যায়, এখনও পর্যন্ত এই কারখানায় ছ’হাজার অশ্বশক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন তৈরি হয়েছে। এ বার ন’হাজার অশ্বশক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এর সাহায্যে মালগাড়ি চালানো হবে। পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য ডানকুনি-অমৃতসর ‘ফ্রেট করিডর’ তৈরি হচ্ছে। এতে দু’টি লাইন বসানো হবে শুধু মালগাড়ির জন্য। আধিকারিকেরা জানান, ইঞ্জিনের ক্ষমতা বাড়ানো হলে স্বাভাবিক ভাবেই মালগাড়ির গতিও বাড়বে। ২০১৮-র নভেম্বরে এই কারখানাকে ন’হাজার অশ্বশক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন বানানোর সবুজ সঙ্কেত দেয় রেল বোর্ড। ২০১৯-এর মাঝামাঝি ইঞ্জিনের নকশা তৈরি করে অনুমতি নেওয়া হয়। পাশাপাশি, এই ইঞ্জিনের উপযোগী ‘ট্রাকশন মোটর’-সহ অন্য যন্ত্রের উন্নয়ন করা হয়েছে।

Advertisement

সংস্থার এ সব সাফল্যে খুশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠগুলি। কিন্তু পাশাপাশি, তাঁরা সংস্থাকে ‘কর্পোরেট’ করার ‘চক্রান্তের’ অভিযোগও করছেন। সিটু নেতা রাজীব গুপ্তের ক্ষোভ, ‘‘সংস্থার শ্রমিকেরাই অক্নান্ত পরিশ্রম করে এই সাফল্য এনে দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও কারখানাকে বেসরকারি করার চক্রান্ত করছে সরকার।’’ আইএনটিইউসি নেতা স্বপন লাহারও অভিযোগ, ‘‘এমন একটি সংস্থাকে ‘কর্পোরেট’ করার নামে বেসরকারিকরণের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এর বিরুদ্ধে শ্রমিকেরা লাগাতার আন্দোলন করবেন।’’ বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পদক্ষেপ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement