তৃণমূল কার্যালয়ের পাশ দিয়ে মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় এক বছর পর একদা শক্ত ঘাঁটি হাটগোবিন্দপুরে রবিবার মিছিল করল সিপিএম। সেই মিছিলে ভিড় দেখে মুখে হাসি দলের নেতাদের।
গত বছর অমিতাভ পাঁজা নামে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় সিপিএমের। পাল্টা সিপিএম সমর্থকদের মারধর ও বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনায় অভিযোগের তির ওঠে তৃণমূলের দিকে। ঘটনার জেরে গ্রামছাড়া হন বেশ কয়েক জন সিপিএম কর্মী-সমর্থক। ঘরছাড়াদের ফেরানোর আশ্বাস দিতে আসেন সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। সেই সময় এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভের মুখে পড়েন বিমানবাবু।
ওই ঘটনার প্রায় এক বছর পর রবিবার, ফের সিপিএমের মিছিল তৃণমূলের কার্যালয়ের পাশ দিয়ে পেরোনোর সময় সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। এ দিন বর্ধমান কালনা রোডে আটাগড় মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হাটগোবিন্দপুর কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মিছিলটি শেষ হয়। মিছিলটি হাটগোবিন্দপুর বাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। কার্যালয় থেকে তৃণমূল কর্মীরা বেরিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। মিছিলও শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়। সিপিএম নেতা অমল হালদার বলেন, ‘‘মিছিল ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা থাকলেও পুলিশ তা সামাল দেয়।’’ বর্ধমান ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল দত্ত কোনও ‘উত্তেজনা তৈরির’ কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মিছিল জুড়েই প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে।’’
এ দিনের মিছিলের শুরু থেকেই সিপিএম নেতা অমল হালদার, গণেশ চৌধুরি, মহবুব আলম, আইনুল হকরা তৃণমূলের অপশাসনের অভিযোগ তোলেন। উঠে আসে সাম্প্রতিক সময়ে টেট পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার কথাও। একশো দিনের কাজেও প্রশাসনের বিভিন্ন গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়। হাটতলার পথসভায় সিপিএমের জেলা নেতা অমল হালদার অভিযোগ করেন, বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কর্মীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে শাসক দল। সন্ত্রাস প্রতিরোধে দলীয় কর্মীদের প্রতিরোধের পথে যাওয়ার কথা বলেন অমলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় কোনও বামপন্থী কর্মীর গায়ে হাত পড়লে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশপাশি নিয়মিত মিটিং-মিছিল করতে হবে।’’
পুলিশের হিসেবে অনুযায়ী, এ দিনের মিছিলে হাজার আটেক লোক হয়েছিল। সিপিএমের হিসেবে, আরও বেশি। সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ম্যাটাডর, বাস, ট্রাক, ট্রেকারে করে সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা মিছিলে যোগ দেন। যদিও মিছিল ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় গোটা রাস্তা জুড়েই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল।