বর্ধমান স্টেশনে ট্যাঙ্ক বিপর্যয়ের পর। — নিজস্ব চিত্র।
বেলা সাড়ে ১২টায় পুলিশ খবর পায়, বর্ধমান স্টেশনে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। তড়িঘড়ি অকুস্থলে পুলিশ এসে দেখে, একটি ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়েছে ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মের উপর। যাত্রীরা যাতে সেখানে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন, সে জন্য উপরে শেড লাগানো ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই শেডের উপরে অতিরিক্ত চাপ পড়াতেই ভেঙে পড়ে। নীচেই বসেছিলেন বহু যাত্রী। এই ঘটনায় আহত হন বহু মানুষ। কী করে দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যায় পুলিশ। ছুটে আসেন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। বর্ধমান পূর্বের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘প্ল্যাটফর্ম নম্বর দুই এবং তিনের মাঝে একটি জলের ট্যাঙ্ক ছিল। বেশ পুরনো। আচমকাই ট্যাঙ্কটি ফেটে যায়। ট্যাঙ্কের জল এসে পড়ে তলার শেডে। জলের ভার সইতে না পেরে শেড ভেঙে পড়ে নীচে অপেক্ষারত যাত্রীদের উপর। তাতে অনেকেই আহত হন। আমার থানা প্রথম খবর পায়। তারা ছুটে আসে।’’
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে তিনি খবর পেয়েছেন যে, দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৭ জন আহত অবস্থায় ভর্তি। স্টেশনে ট্রেন চলাচল আংশিক ব্যাহত হয়েছে বলেও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, কী কারণে ট্যাঙ্কে বিপর্যয় ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে রেলের প্রবীণ তিন আধিকারিককে।
স্টেশন সূত্রে খবর, ১৩৩ বছরের পুরনো ওই জলের ট্যাঙ্কটি ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে তৈরি। ১৮৯০ সালের ওই ট্যাঙ্কের জলধারণ ক্ষমতা ছিল ৫৩ হাজার গ্যালনেরও বেশি। কিন্তু অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই ট্যাঙ্কটির সংস্কার হয়নি। যদিও নিয়মিত রঙের প্রলেপ তাতে পড়ত।