শনিবার সন্ধ্যায় স্টেশনের ঝুল-বারান্দা ও থাম ভেঙে পড়ে।—ছবি পিটিআই।
রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেছিলেন বর্ধমান স্টেশনে দুর্ঘটনায় আহতের স্ত্রী। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করল রেলপুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় স্টেশনের ঝুল-বারান্দা ও থাম ভেঙে পড়ায় ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের বাসিন্দা হপনা টুডুর পা ভেঙে যায়। মৃত্যু হয় এক জনের। বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। হপনার স্ত্রী রানি হাঁসদা রেলপুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, রেলের প্রশাসন ও ওই ভবন সংস্কারের কাজ যারা করছিল, ঘটনার জন্য তারা দায়ী। হাওড়া ডিভিশনের রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তে বিশেষ দল গড়া হয়েছে।
রেল পুলিশ (জিআরপি) সূত্রে জানা গিয়েছে, চলাচলের জায়গায় বিপদ ঘটতে পারে এমন জিনিস রাখা ও গাফিলতির জন্য অনিচ্ছাকৃত মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। হাওড়া ডিভিশনের জিআরপি সূত্রে জানা যায়, ডিএসপি এবং দু’জন ইনস্পেক্টরকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হচ্ছে। বর্ধমান জিআরপি থেকে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। তা তদন্তকারী দল খতিয়ে দেখবে। গাফিলতির প্রমাণ মিললে রেল কর্তৃপক্ষকে বিশদে জানানো হবে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানার জন্য উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন থানায় ওই ব্যক্তির ছবি পাঠানো হয়েছে। বর্ধমান থানার কাছে এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘দেহটি বর্ধমান মেডিক্যালের পুলিশ মর্গে রাখা আছে। প্রয়োজন হলে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ‘ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স গেজেট’-এও (সিআইজি) মৃতের ছবি ও পরিচয় প্রকাশের চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ সূত্রের থবর, সাধারণত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেহ পুলিশ মর্গে পাঁচ-সাত দিন রাখা হয়। জিআরপি-র সঙ্গে কথা বলে দেহটি আরও কিছু দিন রাখার ব্যবস্থা করতে বর্ধমান মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। রেল ও জেলা পুলিশের আশা, সিআইজি-তে মৃতের ছবি প্রকাশ হলে পরিচয় জানা যাবে।
আহত হপনা টুডুর স্ত্রী রানি হাঁসদা রেল পুলিশকে জানান, বর্ধমান স্টেশনের কাছে অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে বসেছিলেন তাঁরা। মেয়ে প্রিয়াঙ্কা প্ল্যাটফর্মের দিকে ছিলেন। হঠাৎ থাম থেকে ইটের গুঁড়ো পড়তে থাকে। ভয় পেয়ে তিনি সরে যান। স্বামীও উঠে পড়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু থামটি ততক্ষণে তাঁর স্বামীর পায়ে পড়ে। পাশে বসে থাকা বছর চল্লিশের এক ব্যক্তিও গুরুতর জখম হন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জন্য রেলের গাফিলতিই দায়ী বলে তাঁর দাবি।
দুর্ঘটনার দু’দিনের মাথায় রেল পুলিশের সুপার (হাওড়া ডিভিশন) কে কর্ণন ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছিলেন। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত চলছে।’’