এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। Stock Photographer
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম, শহর পেরিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ বার সেই প্রতিবাদের ঢেউ এভারেস্টের বেসক্যাম্পে, ৫৩৬৪ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে দিলেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের অমরপুরের বাসিন্দা ফাল্গুনী দে। তিনি দক্ষিণ কলকাতার উইমেন্স ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ভূগোলের সহকারী অধ্যাপক। তিনি জানান, দশ দিনের মোট ২৩০ কিলোমিটার চড়াই-উৎরাইয়ের হাঁটা পথ তাঁদের স্লোগানে মুখরিত ছিল।
২২ অক্টোবর মঙ্গলবার ভারতীয় সময়ে বেলা ১টা ১০ নাগাদ নেপালে এভারেস্ট বেসক্যাম্পে পৌঁছন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন দলের অপর এক সদস্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার অভিজ্ঞ পর্বতারোহী সুরজিৎ রায়। তিনি জানান, দুর্গাপুজোর পরে একাদশীর দিন কলকাতা থেকে তাঁরা রওনা হয়ে কাঠমাণ্ডু পৌঁছন। সেখানে থেকে নামচে বাজার, ডিঙবোচে পেরিয়ে গোরকশেপ, কালাপাত্থর হয়ে এভারেস্ট বেসক্যাম্পে অভিযান শেষ করেন। সেখানে পৌঁছে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’, ‘উই ডিমান্ড জাস্টিস’ লেখা পোস্টার হাতে স্লোগান তোলেন তাঁরা। মাটিতেও ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ লিখে দেন। ফাল্গুনী বলেন, “জনপ্রিয় এই পথে দেশ-বিদেশ থেকে বহু অভিযাত্রী আসেন। তাঁদের অনেকেই ঘটনার কথা শুনেছেন। যাঁরা জানতেন না, তাঁরাও জানার পরে আমার প্রতিবাদকে সমর্থন করেন।” তাঁর মতে, এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন অপরাধ হিসেবে ধরলে ভুল হবে। এটি আসলে একটা সামাজিক সমস্যা। এই ধরনের অনেক ঘটনাই আমাদের সামনে আসেও না। তিনি বলেন, “দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আমরা লক্ষ লক্ষ পা হেঁটে সমতল থেকে বেসক্যাম্পে এসেছি। প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা কামনা করি।”
তিনি আরও জানান, এই সামাজিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার আশায় তাঁরা বেসক্যাম্পে পৌঁছে ‘উই শ্যাল ওভার কাম’ গান ধরেন। গলা মেলান অনেকেই। পর্বতারোহণ ফাল্গুনীর নেশা। কর্মসূত্রে তিনি কলকাতায় যাদবপুরে বাস করেন। ইতিপূর্বে হিমালয় ছাড়াও তিনি আফ্রিকা মহাদেশের কিলিমাঞ্জারো এবং ইউরোপ মহাদেশের এলব্রুস পর্বতে সফল অভিযান করেছেন। স্ত্রী, পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীদের ভালবাসা এবং উৎসাহই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে বলে জানান তিনি।