চলছে কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র
ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার নিয়ে আর্সেনিক অধ্যুষিত পূর্বস্থলী ১ ব্লকের চাষিদের সতর্ক করলেন কেন্দ্রীয় ভূমিজল বোর্ডের বিজ্ঞানীরা। বোরো চাষের এলাকা কিছুটা কমিয়ে ডাল, বাদাম জাতীয় চাষের দিকে ঝোঁকার পরামর্শ দেন তাঁরা। পাশাপাশি, চাষে জলের ব্যবহার কমাতে বিন্দু সেচের মতো আধুনিক ব্যবস্থায় জোর দেন। চাষের জন্য কী ভাবে এ রাজ্যে অগভীর নলকূপের সংখ্যা বাড়ছে, সে পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন বিজ্ঞানী অম্লানজ্যোতি কর।
জেলার আর্সেনিক মানচিত্রে দু’দশকেরও আগে ঠাই পেয়েছে এই ব্লক। আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের ১৩৯টি মৌজার ভূগর্ভস্থ জলের পরিস্থিতি এলাকার চাষিদের জানাতেই কেন্দ্রীয় ভূ-জল বোর্ডের পূর্ব ক্ষেত্র জনসংযোগ কর্মসূচিতে এ দিনের অনুষ্ঠান করে। অম্লানবাবু জানান, বৃষ্টি ক্রমশ কমে আসছে। নগরায়ণের প্রভাবে মাটির তলার জল স্তরের নিয়মিত উন্নতি হচ্ছে না। অন্য দিকে, বোরো চাষের এলাকা বেড়েছে রাজ্যে। তাঁর দাবি, যে সমস্ত জেলায় মাটির তলা থেকে চাষের জন্য প্রচুর জলা তোলা হয়েছে সেখানে আর্সেনিকের মাত্রা বেড়েছে। বর্তমানে রাজ্যের ১০৪টি ব্লক আর্সেনিক তালিকা ভুক্ত। পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য বর্ষার জল সংরক্ষণ এবং কৃত্তিম উপায়ে জলস্তর বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন তিনি।
বিজ্ঞানীরা জানান, এই ব্লকে দুটি জলস্তর রয়েছে। প্রথমটি রয়েছে মাটির তলা থেকে ১৫৮ মিটার এবং দ্বিতীয় রয়েছে ১৯০ থেকে ৩৩০ মিটারের মধ্যে। বিজ্ঞানীদের দাবি, দ্বিতীয় স্তরটি আর্সেনিক মুক্ত। পানীয় জলের জন্য এই স্তর ব্যবহার করা উচিত। তাঁদের পরামর্শ সমুদ্রগড়, নসরতপুর, জাহান্নগর, কুশগড়িয়া, রাজাপুর, তেলিনপাড়া, নিচুচাপাহাটি মতো আর্সেনিক অধ্যুষিত এলাকায় কুয়োর জল পান অনেক নিরাপদ। তবে কুয়োর পাশে কোনও নর্দমা রাখলে চলবে না। পুরনো পুকুর সংস্কারের কথা বলা হয়।
মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ জানান, এ বছরে বৃষ্টি কম হওয়ায় চাষিরা পাট পচাতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে কম জলে চাষের দিকে ঝুঁকতেই হবে। প্রচারও চালানো হচ্ছে, তাঁর দাবি। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পূর্বস্থলী ১ ব্লক কৃষি আধিকারিক পরিতোষ হালদার।