প্রতীকী ছবি।
করোনার সঙ্গে লড়তে তাঁদের অনেকেই দীর্ঘদিন ঘরছাড়া। ক্রমাগত মানসিক চাপের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই অল্পে ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। আবার কেউ কেউ নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। পুলিশ কর্মীদের এ ধরনের মানসিক অবসাদ থেকে বার করতে মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। পুলিশের কর্তাদের দাবি, জেলা স্তরে এ ধরনের উদ্যোগ একমাত্র পূর্ব বর্ধমানই নিয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অবসাদ থেকে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের রেহাই দিতে বিশেষ ‘কাউন্সেলিং’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুশ্চিন্তা, একাকিত্ব, মানসিক চাপ কমাতে জেলা পুলিশ লাইনে গঠন করা হয়েছে ‘ওয়েলনেস সেন্টার’। জেলা পুলিশের একটি দল ওই ‘ওয়েলনেস সেন্টারের’ কাজকর্ম দেখভাল করতেও শুরু করেছে। এক জন মহিলা ও এক জন পুরুষ মনোবিদ নিয়োগ করা হয়েছে। পৃথক ঘরে তাঁরা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। এক-একটি পর্যায়ে মনোবিদের কাছে এক জন পুলিশ কর্মীই যাবেন। কারা কারা মনোবিদের কাছে যাচ্ছেন, তা প্রকাশ্যে আনা হবে না বলে পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সপ্তাহে তিন দিন করে এই কর্মসূচি চলবে। আপাতত বাছাই করা কনস্টেবল, সাব ইনস্পেক্টরদের (এস আই) জন্য মনোবিদ নিয়োগ করা হয়েছে।’’
জেলা পুলিশের প্রচুর কর্মীর মধ্যে প্রায় শ’খানেক জনকে প্রাথমিক ভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে বাছাই হল? জেলা পুলিশের কর্তারা জানান, এস আই ও কনস্টেবলদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তারপরে তাঁদের তিনটে ভাগে ভাগ করা হয়েছে—এক) মানসিক অবসাদে ভুগছেন। দুই) নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন (প্যাথলজিক্যাল অ্যালকহলিক)। তিন) অল্পেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন।
পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, শুধু পরামর্শ দিলে হবে না। মনোবিদদের কাছে পুলিশ কর্মীরা যাতে কোনও দ্বিধা, সঙ্কোচ ছাড়াই মনের কথা খুলে বলতে পারেন, সেই পরিবেশের দিকেও নজর দিতে হবে। তবেই অবসাদের হাত থেকে বাঁচানো যাবে তাঁদের। জেলা পুলিশের দাবি, সে কথা মাথায় রেখে পুলিশ লাইনেই আলাদা দু’টি ঘরে ‘ওয়েলনেস সেন্টার’ করা হয়েছে।