হাল ধরলেন শিক্ষক-চিকিৎসকেরাই

বুধবার রাধারানি ওয়ার্ডে বাঁকুড়ার কোতলপুরের উজির মোল্লা (৫০) মারা গিয়েছেন। পরিজনেদের অভিযোগ, দু’দিন ধরে ওষুধ, ইঞ্জেকশন কিছুই দেওয়া হয়নি তাঁকে। বিনা চিকিৎসাতেই মারা গিয়েছেন উনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০১:২৩
Share:

বন্ধ বহির্বি‌ভাগ। নিজস্ব চিত্র

বহিবির্ভাগ বন্ধ। জরুরি বিভাগে কুরুক্ষেত্র। বিপদে পাশে থাকলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিৎসকেরা।

Advertisement

কলকাতায় নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নদের মারধর করার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও শুরু হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। টানা ৪৮ ঘন্টা ধরে জুনিয়র চিকিৎসকরা রোগী দেখেননি। এ অবস্থায় সারা দিন, সারা রাত জেগে মঙ্গলবার, বুধবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, রাধারানি ওয়ার্ড, শিশু বিভাগ, সিসিইউ, আইসিসিইউ, সব জায়গায় হাল ধরেন শিক্ষক-চিকিৎসকেরা। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘রাতভর ওয়ার্ডে থেকে চিকিৎসা করেছি। পরীক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি আমরা বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ায় জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য কোনও বিভাগে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’’

যদিও বুধবার রাধারানি ওয়ার্ডে কিডনি সমস্যা নিয়ে ভর্তি থাকা বাঁকুড়ার কোতলপুরের উজির মোল্লা (৫০) মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিজনেদের অভিযোগ, দু’দিন ধরে ওষুধ, ইঞ্জেকশন কিছুই দেওয়া হয়নি তাঁকে। বিনা চিকিৎসাতেই মারা গিয়েছেন উনি।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্স মিলিয়ে ৮০০ জন কর্মবিরতি পালন করেন। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই বিপাক টের পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকদের হাসপাতালে ডেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাঁরা প্রাথমিক দায়িত্ব সামলানোর পরে শিক্ষকদের সমস্ত ছুটিও বাতিল করা হয়। শিশু ও প্রসূতি বিভাগে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্যে বিভাগীয় প্রধানদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলা হয়। ওই দু’টি বিভাগেই দলে ভেঙে সিনিয়র ডাক্তারেরা রাতভর রোগী সামাল দিয়েছেন। হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “ভাল পরিষেবা দেওয়ার সমস্ত চেষ্টা করছি।’’

এ দিন বিকেলে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে হাসপাতালে বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে আলোচনায় বসেন সুপার ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল। এক চিকিৎসক-শিক্ষক বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক-শিক্ষকদের নতুন ‘রোস্টার’ তৈরি করা হচ্ছে। রোগীদের স্বার্থে প্রত্যেককে বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার জন্যে বলা হয়েছে। সব শিক্ষকই সেই দায়িত্ব পালনে রাজি।’’ বছর দেড়েক আগেও হাসপাতালে কর্মবিরতির সময় প্রবীণ চিকিৎসকেরাই পরিষেবা চালু রেখেছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি না তোলা পর্যন্ত রোগী ভর্তি নিয়ে সমস্যা, কিছুটা ভোগান্তি থাকবে। তবে বহির্বিভাগের পরিষেবা নিয়ে সমস্যা হবে বলেই তাঁদের দাবি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement