ধর্মঘটে অর্ধেক উৎপাদন খনিতে

কয়লা শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের ওই প্রস্তাবের কথা সম্প্রতি ঘোষণা করে কেন্দ্র। তার পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

পাটমোহনা কোলিয়ারিতে ধর্মঘটের সকালে। নিজস্ব চিত্র

কয়লা শিল্পে একশো শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধিতায় মঙ্গলবার ধর্মঘট পালন করল বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন খনিতে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিক-কর্মীরা। তবে জোর করে কাউকে ধর্মঘটে শামিল করা হয়নি বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের। তাঁদের আরও দাবি, ধর্মঘট সফল হয়েছে। ইসিএলের তরফে জানানো হয়েছে, উৎপাদন প্রায় অর্ধেক মার খেয়েছে।

Advertisement

কয়লা শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের ওই প্রস্তাবের কথা সম্প্রতি ঘোষণা করে কেন্দ্র। তার পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, সিটু-সহ নানা সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ মঙ্গলবার এক দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয়। কমিটির আহ্বায়ক রামচন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘ধর্মঘট সফল হয়েছে। বেশির ভাগ খনিতেই কাজ হয়নি। এর পরেও সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে লাগাতার বিক্ষোভ হবে।’’ এ দিন সোদপুর এরিয়ার বেজডিহি, পাটমোহনা খনিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, শ্রমিক-কর্মীরা কয়লা তোলা ও পরিবহণ বন্ধ রেখেছেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে। তবে সাতগ্রাম প্রজেক্ট, কালিপাহাড়ি, পরাশিয়া, খোট্টাডিহি, ফুলবাগান, অমৃতনগর কোলিয়ারিতে উৎপাদন হয়েছে।

ধর্মঘট ঘিরে বড় কোনও গোলমাল না পাকলেও ঝাঁঝড়া এরিয়ার এমআইসি-তে অশান্তি বাধে। এই ধর্মঘটে শামিল হয়নি তৃণমূলের খনি শ্রমিক সংগঠন কেকেএসসি। অভিযোগ, এমআইসি-তে শ্রমিকদের কাজে যোগ না দিতে অনুরোধ করেন ধর্মঘটের সমর্থকেরা। তাতে আপত্তি তোলেন কেকেএসসি-র সমর্থকেরা। সে নিয়ে হাতাহাতি বাধে। ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার পুলিশ ও ইসিএলের রক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

Advertisement

এই একই দাবিতে সোমবার থেকে পাঁচ দিনের খনি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস। সংগঠনের ইসিএল শাখার সাধারণ সম্পাদক বিনোদ সিংহের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার অধিকাংশ খনিতেই শ্রমিক-কর্মীরা কাজে যোগ দেননি। আমরা ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমস্ত খনিতে ধর্মঘট করব।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী, আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়, এআইটিইউসি-র আরসি সিংহেরাও দাবি করেন, ‘‘প্রতীকি ধর্মঘট সফল হয়েছে। তবে এখানেই আন্দোলন শেষ হচ্ছে না। ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলন হবে।’’

কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহ বলেন, ‘‘ধর্মঘটে আমরা বিশ্বাসী নই। তাই এই কর্মসূচিতে যোগ দিইনি।’’ তাঁর দাবি, জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ হয়েছে। তিনি জানান, কয়লা শিল্পে একশো শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরাও আন্দোলন করছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় কোল ইন্ডিয়ার কার্যালয়ে দিনভর অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। পুজোর পরে দিল্লিতে তাঁরা সংসদ অভিযানও করবেন বলে জানান হরেরামবাবু।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, কয়লা তোলার কাজ প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ মার খেয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাজমহল ও মুগমা এবং এ রাজ্যের সোদপুর এরিয়ার উৎপাদন। সার্বিক উপস্থিতি ছিল প্রায় ৬৫ শতাংশ। তবে বৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement