Galsi

গ্রামে হাইস্কুল না থাকায় বন্ধ হচ্ছে পড়া, আক্ষেপ

ওই গ্রামে প্রায় ছ’শো হিন্দিভাষী পরিবার রয়েছে। গ্রামেই রয়েছে শঙ্করজি হিন্দি এফপি স্কুল নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি ১৯৭৩ সালে চালু হয়। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা একশোরও বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪০
Share:

পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল চলছে স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

প্রাথমিক স্কুলে রয়েছে। কিন্তু আশেপাশে কোনও হাইস্কুল নেই। ফলে গলসি ১ ব্লকের সোদপুরমানা গ্রামের পড়ুয়াদের প্রাথমিক পাশ করে যেতে বুদবুদ বা পানাগড়ে। যোগাযোগের অসুবিধা ও আর্থিক কারণে অনেকেই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। নাবালিকা বিয়েও বাড়ে, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

ওই গ্রামে প্রায় ছ’শো হিন্দিভাষী পরিবার রয়েছে। গ্রামেই রয়েছে শঙ্করজি হিন্দি এফপি স্কুল নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি ১৯৭৩ সালে চালু হয়। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা একশোরও বেশি। এক জন পার্শ্বশিক্ষক-সহ তিন জন শিক্ষক রয়েছেন স্কুলে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু, মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করার জন্য কোনও সরকারি হিন্দি হাইস্কুল নেই এলাকায়। ফলে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করার পরে অনেক পড়ুয়ায় বিপাকে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের পাশে কসবায় একটি বাংলা মাধ্যম স্কুল রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিকে বাংলা পড়ার সুযোগ না থাকায় সেখানে পড়তে সমস্যায় হয় ওই পড়ুয়াদের। বাধ্য হয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরে বুদবুদে আর ২১ কিলোমিটার দূরে পানাগড়ের হিন্দি হাইস্কুলে যেতে হয় তাদের। বাসিন্দারা জানান, পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে কচিকাঁচারা দূরে স্কুল যেতে ভয় পায়। যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, তাঁরা ছেলেমেয়েকে অন্যত্র রেখে পড়াশোনা করাতে পারেন। কিন্তু অস্বচ্ছল পরিবারের পড়ুয়াদের পক্ষে সেই সুযোগ পাওয়া মুশকিল। ফলে প্রাথমিক স্কুল পাশ করার পরে অনেকেই পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার কারণে দূরে পাঠাতেও চান না অনেক অভিভাবক।

Advertisement

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, পড়াশোনা করার সুযোগ নেই বলেই গ্রামে বাড়ছে বাল্যবিবাহের সংখ্যা। প্রভুনাথ চৌধুরী, রাজু মাল, শ্যামসুন্দর সাউরা বলেন, ‘‘গ্রামের প্রাথমিক স্কুলটিকে ২০১৭ সালে উচ্চ প্রাথমিক স্কুল হিসেবে গড়ার উদ্যোগ করা হয়। কিন্তু বছর দুয়েক আগে শুধু মাত্র পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালু হয়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু হলে শুধু এই এলাকা নয়, আশপাশেও বাল্যবিবাহ কমবে।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহর ঝাঁ বলেন, ‘‘দূরে হাইস্কুল হওয়ায় বেশির ভাগ পড়ুয়ার সমস্যা হয়। গ্রামের বেশির ভাগ ছেলে, মেয়ে পঞ্চম শ্রেণি পরে স্কুলছুট হয়ে যায়। কেউ সংসারের কাজে লেগে যায়। কেউ বাইরে শ্রমিকের কাজে চলে যায়।’’

অবর বিদ্যালয় পরির্দশক (বুদবুদ চক্র) জয়ন্ত বর্মণ বলেন, ‘‘ওই স্কুলটির কথা শুনেছি। স্কুলটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement