বহু উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ হয়নি। প্রতীকী চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম পর্যায়, ‘আবাস সফ্ট’-এর টাকা পাওয়ার পরেও জেলায় সব উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করেননি। আবার, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়, ‘আবাস প্লাস’-এর অনুমোদন পাওয়ার পরেও সব উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ হয়নি। তাতে কেন্দ্র থেকে টাকা আসা শুরু হলে ওই সব উপভোক্তারা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে জেলা প্রশাসন মনে করছে। সে জন্য ২৮ মার্চের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে পড়ে থাকা বাড়ি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুমোদিত বাড়ির ক্ষেত্রে আধার কার্ডের সংযোগ শেষ করার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক (এগজ়িকিউটিভ অফিসার) তথা জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। সেই সঙ্গে, প্রতিটি উপভোক্তার বাড়ি পরিদর্শনের জন্য ব্লক ও পঞ্চায়েতকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, “১০০ শতাংশই বাড়ি তৈরি শেষ করার জন্যে ও আবাস প্লাসে বাকি আধার সংযোগ করার জন্যেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।“ গত ১৪ মার্চ জেলাশাসক এক নির্দেশে জানিয়েছেন, বারবার চেষ্টা করার পরেও বাড়ি তৈরির কাজ ১০০ শতাংশ শেষ হয়নি। ব্লকগুলি সেই কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অসম্পূর্ণ থাকা বাড়িগুলি পরিদর্শন করে তা শেষ করার জন্যে ব্লক ও পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ‘আবাস সফ্ট’ থেকে পূর্ব বর্ধমানে ২,৪৫,৯৯২টি বাড়ি তৈরির অনুমতি মিলেছিল। ঝাড়াই-বাছাই করার পরে এখনও পর্যন্ত ২,৪১,৬৭৮টি বাড়ি তৈরি হয়েছে (৯৮%)। বাকি ছিল ৪,৩০০টি। তার মধ্যে ১,৬৭১ জন বাড়ি তৈরি করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, জেলায় আর ২,৬২৯টি বাড়ি তৈরি করতে হবে। তার মধ্যে ভাতার ব্লকেই করতে হবে ৬০০টি বাড়ি। বর্ধমান ১, মেমারি ১ ও রায়না ১ ব্লকে প্রায় ২০০টি করে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়নি।
জেলা পরিষদের উপ-সচিব তথা আবাস প্রকল্পের নোডাল অফিসার মৃন্ময় মণ্ডল বলেন, “বাড়ির কাজ শেষ না করায় ১১৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, ২০ লক্ষ টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম পর্যায়ের বাড়ি তৈরির কাজ মেমারি ২ ব্লক ১০০ শতাংশই শেষ করতে পেরেছে। জেলার নিরিখে বর্ধমান ১ ও ২, গলসি ১, রায়না ১ ও ২ লক্ষ্যমাত্রার ৯৭% বা তার বেশি বাড়ি তৈরি করতে পেরেছে।
আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য পূর্ব বর্ধমান ৫৬,৬৩৩টি বাড়ির অনুমতি পেয়েছে। যার মধ্যে ‘জিয়ো-ট্যাগ’ হয়েছে ৫৫,৪৭৫টি বাড়ির। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঠিক রয়েছে ৫৪,৫৪০ জনের। কিন্তু ৭,৩৫৪ জনের আধার-সংযোগ বাকি রয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, যে কোনও দিন কেন্দ্র থেকে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পাঠানো শুরু করলে, আধার সংযোগ না থাকায় উপভোক্তাদের টাকা পেতে অসুবিধা হবে। সে কারণে ২৮ মার্চের মধ্যে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ করাতে চাইছেন জেলাশাসক।
রিপোর্ট অনুযায়ী, আধার সংযোগ বেশি বাকি রয়েছে রায়না ১ (১,১২৫), বর্ধমান ১ (১,০৫৩) ও মঙ্গলকোটে (১,১১৬)। এ ছাড়া, ‘আবাস সফ্ট’-এ নাম থাকা আউশগ্রাম ১, গলসি ২ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বেশ কয়েক জন উপভোক্তারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ হয়নি বলেজানা গিয়েছে।