ফের চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হল জামালপুরের বাহাদুরপুর গ্রামে। মৃত চাষি আসাদ আলি মোল্লার (৪৮) পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, আলু চাষে লোকসান ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানে ক্ষতির কারণেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও শাসক দলের তরফে পারিবারিক অশান্তির কারণেই আসাদ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি।
বৃহস্পতিবার রাতে আসাদ নিজের ঘরেই জানলার শিকে গামছায় ফাঁস লাগান বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান আসাদ আত্মঘাতী হয়েছেন। আসাদকে জামালপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। পরে ওই চাষির দেহ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। হাসপাতালের মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে মৃত চাষির ভাই বসির মোল্লা জানান, তাঁর দাদা মোট ছ’বিঘে জমিতে আলু চাষ করেন। কিন্তু আলু চাষে ব্যাপক লোকসান হয়। আলু চাষ করতে গিয়ে আসাদ প্রায় দু’লক্ষ টাকা দেনা করেন বলেও পরিবারের সূত্রে জানানো হয়েছে। তা ছাড়া আজ, শনিবার আসাদের বড় মেয়ের বিয়ের আশীর্বাদ। মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি ও বরপক্ষের দাবি মেটানোর চাপও ছিল আসাদের উপর। ৩ বিঘে জমিতে বোরো ধান চাষ করেন আসাদ। কিন্তু গত মঙ্গলবার প্রবল শিলাবৃষ্টির জেরে আসাদের বোরো চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয় বলে পরিবারের সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বসির বলেন, ‘‘দেনা মেটাতে না পারা, চাষে ক্ষতি ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। তার জেরেই দাদা আত্মঘাতী হয়েছেন।’’ প্রতিবেশি চাষি তথা আসাদের এক আত্মীয় আলিমুদ্দিন মল্লিকও বলেন, ‘‘গোটা জামালপুর জুড়েই শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এর আগে আলু চাষেও লোকসান হয়।’’
জেলার এক কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় যদিও বলেন, ‘‘পরপর শিলাবৃষ্টিতে খণ্ডঘোষ, মেমারি ১ ও ২ এবং বর্ধমান সদর ব্লকের প্রায় ৭৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।” তবে জামালপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতির কথা তিনি জানেন না বলেই দাবি করেন জগন্নাথবাবু। শাসক দলের তরফেও পারিবারিক অশান্তির কারণেই জামাল আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, “সম্পন্ন চাষি আসাদ সাহেবের ক্ষেত্রে দেনা মিটিয়ে দেওয়া অসম্ভব নয়। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জানতে পেরছি তিনি পারিবারিক অশান্তির কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন।’’