চালকলের সামনে বিক্ষোভে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব বর্ধমানের পারাজে একটি নামী ব্র্যান্ডের চাল কোম্পানির মিলের সামনে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় কৃষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা বিজ্ঞাপনে খরচ করলেও এলাকার চাষিদের চরম ক্ষতি করছে ওই সংস্থা। তাদের রাইসমিলের ছাই এবং পচা জল প্রায় দু’হাজার বিঘা জমির ধানের চাষের ক্ষতি করছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, ওই রাইসমিল কর্তৃপক্ষ ন্যায্যমূল্যে জমির ধান কিনে নিক। চালকল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সরকারি নির্দেশের দোহাই দিয়ে কোনও আশ্বাস দেননি।
গলসি-১ নম্বর ব্লকের পারাজ অঞ্চলের শতাধিক চাষি বৃহস্পতিবার সকালে জড়ো হন স্থানীয় ওই রাইসমিলে। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়ে গলসি থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। চাষিদের অভিযোগ, চালকলে ব্যবহারের পর পচা বর্জ্য জল পাইপের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী সেচ ক্যানেলে ও জমিতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এলাকার পরিবেশে ক্ষতি হচ্ছে। কৃষিজমিতে মিলের ছাই উড়ে এসে ধানের ফলনের ব্যাঘাত ঘটেচ্ছে। পাশাপাশি মিলের ছাই ও ধুলো পার্শ্ববর্তী গ্রামে উড়ে গিয়ে বায়ুদূষণ ছড়াচ্ছে। নিত্যদিন ছাই উড়ছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে। পথচারী থেকে যানবাহন চালক ও আরোহীরা বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন।
পাশাপাশি, ভূগর্ভ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার জল তুলে এলাকার জলস্তর নিচে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকার নির্ধারিত সহায়ক মুল্যের ছাড়াই রাইসমিলকে ধান কিনতে হবে বলে দাবি তোলেন চাষিরা। চাষিদের দাবি, মিল কর্তৃপক্ষ একটি ন্যায্য দাম নির্ধারণ করে তাঁদের ধান কিনে নিন।
এ প্রসঙ্গে রাইসমিলের ম্যানেজার বেনুরাম খাঁ জানান, সরকার যে ভাবে ধান কিনতে বলবেন, তাঁরা তাই করবেন। কম দামে ধান কেনা হবে কি না, তা রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশন স্থির করবে। রাইসমিলের মালিক পার্থ নন্দী বলেন, ‘‘ধান কেনার বিষয়টি এই ভাবে হয় না।’’ তবে রাইসমিলের ছাই ও দূষিত জল জমি নষ্ট করছে বলে মানতে চাননি তিনি।