চালকলের সামনে বিক্ষোভ চাষিদের। নিজস্ব চিত্র।
ফের আন্দোলনের পথে ‘রাজ্যের শস্যগোলা’ পূর্ব বর্ধমানের কৃষকেরা। দূষণ রুখতে ট্রাক্টর মিছিল করে চালকলের গেটে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। গলসির চাষিরা শনিবার কয়েকটি রাইসমিলের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
শনিবার সকালে পারাজ, পুরসা এবং কোলকোলের চাষিরা ট্রাক্টর নিয়ে এলাকার চালকলগুলির গেটে গেটে মিছিল করে হাজির হন। মাইকে স্লোগান দেন, চালকল থেকে বর্জ্য জল এবং ছাই চাষের ক্ষেতে ফেলা চলবে না। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, চালকলগুলি ভূগর্ভ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার জল তুলে এলাকার জলস্তর নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। ফলে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে যায় গলসি থানার পুলিশ। চাষিদের মূল দাবি, অবিলম্বে মিলের পচা জল ও ছাই চাষের জমিতে ফেলা বন্ধ করতে হবে এবং দালালদের কাছ থেকে ধান কেনা বন্ধ করে সরাসরি চাষিদের থেকে কিনতে হবে। স্থানীয় কৃষক মিন্টু শ্যাম বলেন, ‘‘চালকলের পচা জল ও ছাইয়ে এলাকার কৃষিজমির ক্ষতি হচ্ছে। ফলে দিনের পর দিন ধানের ফলন কমে যাচ্ছে। তা ছাড়া ভূগর্ভ থেকে হাজার হাজার লিটার জল তোলায় এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জলস্তর হু হু করে নেমে যাচ্ছে। পাশাপাশি, পচা জলের দূর্গন্ধ এবং ছাইয়ের গুঁড়োতে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’’
আন্দোলনকারীদের তরফে নুরুল হাসান বলেন, ‘‘রাইসমিল কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় সমস্যার কথা জানানো হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। মে মাসের শেষ সপ্তাহেও একই ভাবে আন্দোলনে নেমেছিলাম আমরা। এরপর গত ৫ জুন জেলাশাসকের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের একটি দল এলাকায় সরজমিনে তদন্তে যায়। কিন্তু তারপরও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমরা এখন নিরুপায় হয়ে তাই ফের আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছি।’’ চালকলে বিক্ষোভের বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া শনিবার বলেন, ‘‘কৃষক এবং রাইসমিল কর্তৃপক্ষের বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে।’’