Raniganj

স্থানীয়দের নিয়োগ নিয়ে চর্চা এলাকায়

সাম্প্রতিক অতীতে কারখানায় স্থানীয়দের নিয়োগের প্রশ্নে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্ত তেতে উঠেছে। বিষয়টি ধীরে-ধীরে বিধানসভা ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

সাম্প্রতিক অতীতে কারখানায় স্থানীয়দের নিয়োগের প্রশ্নে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্ত তেতে উঠেছে। বিষয়টি ধীরে-ধীরে বিধানসভা ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

জেলা শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় দশ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, মাঝারি কারখানা আছে। তাতে দেড় লক্ষেরও বেশি কর্মী কাজ করেন। এ ছাড়া, প্রচুর রাষ্ট্রায়ত্ত ও রাজ্য সরকারের কারখানা আছে। সেখানে, স্থায়ী ও অস্থায়ী পদে লক্ষাধিক কর্মী কাজ করেন। এ দিকে, জেলায় সব মিলিয়ে ৬১২টি কারখানা বন্ধ।

সিটু ও সিপিএম-এর দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে নিজেদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। ফলে, শূন্য পদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, প্রথম থেকেই বেশির ভাগ কারখানায় প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মী নিয়োগের কথা বলে বহিরাগতদেরই নিয়োগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, অদক্ষ কর্মীদের তালিকাতেও বহিরাগতদের প্রাধান্যই বেশি। বেশ কয়েকবছর ধরে কর্মীরা অবসর নেওয়ার পরে সেই শূন্যপদেও বাইরের কর্মীদের অস্থায়ী নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিধানসভা ভোটের প্রচার-পর্বে অবশ্যই সরব হবেন বলে জানান রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত। পাশাপাশি, তাঁর দাবি, ‘‘বন্ধ কারখানার জমি অধিগ্রহণ করে নতুন কারখানা তৈরি করুক সরকার, এই আর্জিও আমরা জানাচ্ছি।’’ সিপিএম-এর দাবি, বহিরাগতদের নিয়োগ করাটা কারখানা কর্তৃপক্ষ লাভজনক মনে করে। কারণ, দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে বহিরাগত কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ সে ভাবে দানা বাঁধে না। তাতে কর্তৃপক্ষের ‘সুবিধা’ হয়। সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার জানান, তাঁরা চান স্থানীয়দের নিয়োগের বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট নীতি তৈরি হোক। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীও জানান, স্থানীয়দের দাবিতে তাঁরাও নানা কারখানায় স্মারকলিপি দিচ্ছেন।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রেও দাবি, সম্প্রতি দুর্গাপুরে দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্থানীয়দের নিয়োগের বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তৃণমূলের জেলার অন্যতম মুখপাত্র অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘আমরা সব সময় স্থানীয়দের নিয়োগের পক্ষে। তা নিয়ে লাগাতার আন্দোলনও চলছে। বিধানসভা ভোটে আমরা, এই বিষয়টি পরিসংখ্যান দিয়ে মানুষের কাছে তুলে ধরব।’’ তবে বিজেপির আসানসোল জেলা সহ-সভাপতি প্রমোদ পাঠকের অভিযোগ, সিপিএম বা তৃণমূল কোনও দিনই বহিরাগতদের নিয়োগ রুখতে সে ভাবে আন্দোলন করেনি। এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিধানসভা ভোটের আগে সরব হবেন। যদিও তৃণমূল ও সিপিএম নেতৃত্ব বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

‘সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের দাবি, ‘‘স্থানীয়দের বঞ্চিত করার অভিযোগ ঠিক নয়। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীদের মেধার ভিত্তিতেই নেওয়া হয়। এ ছাড়া, অন্য পদে স্থানীয়রাই প্রাধান্য পেয়ে আসছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement