চলছে পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র ।
দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে, রবিবার শেখ আরিফ ওরফে রাহুল (২৭) নামে জেমারি গ্রামের এক যুবকের দেহ উদ্ধার করল পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর থানা। পুলিশ জানায়, দেহটি কাদায় পোঁতা ছিল। পরিবার খুনের মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ জানায়, চার জনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সম্পর্কগত কোনও টানাপড়েন থেকে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ দিকে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখান। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চিত্তরঞ্জন-আসানসোল রোড অবরোধও করা হয়। পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
মানেনি।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে নিহতের বাবা শেখ আজাদ জানান, গত শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ জলখাবার খেয়ে কারও ফোন পেয়ে, বাড়ি থেকে বার হন আরিফ। তার পরে আর বাড়ি ফেরেননি আরিফ। তাঁর মোবাইলও বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে শনিবার সকালে পরিবারের তরফে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। আজাদের অভিযোগ, “ছেলেকে খুঁজে বার করার ক্ষেত্রে কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি পুলিশের।”
এ দিকে, রবিবার সকালে স্থানীয় সূত্রে আরিফের পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, বাসুদেবপুর জেমারি আমবাগানের কাছে একটি পরিত্যক্ত এলাকায় রক্তের ছোপ রয়েছে। আজাদ এর পরে, পড়শিদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। আশপাশের অঞ্চলে খোঁজ করতে-করতেই তাঁদের মনে হয়, কাদায় কোনও দেহ পোঁতা রয়েছে। এর পরে, পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়। ওই এলাকার আশপাশেই আরিফকে শেষ বার কয়েক জনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল বলে স্থানীয় একটি সূত্রে দাবি।
আজাদের দাবি, ঘটনার নেপথ্যে স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল নেতার ভূমিকা রয়েছে। তবে, লিখিত অভিযোগে কোনও নেতার নাম নেই। যদিও, তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান বলেন, “এমন ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত নন। পুলিশ তদন্ত করলেই আসল সত্য
বেরিয়ে আসবে।”
ঘটনাস্থলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁরা দাবি করেন, নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পরেই পুলিশ তল্লাশি শুরু করলে এমন ঘটনা ঘটত না। এ দিকে, জেমারি রেলগেটের কাছে দুপুর ১২টা থেকে রাস্তা অবরোধও শুরু করেন বাসিন্দাদের একাংশ। ২০ মিনিট ধরে বিক্ষোভ চলে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, “নিখোঁজ এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে চার জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” তদন্তকারীদের একাংশ জানান, এলাকা সূত্রে তাঁরা জানতে পেরেছেন, নিহত যুবকের সঙ্গে এক জনের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ঘটনার নেপথ্য কারণ সেটিই কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।