তারকনাথ চট্টোপাধ্যায়।
এক দিন নিখোঁজ থাকার পরে, তারকনাথ চট্টোপাধ্যায় (৩৬) নামে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) এক কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল কারখানার ভিতর থেকেই। পুলিশ জানায়, মৃতের বাড়ি দেশবন্ধু কলোনিতে। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কোনও অবসাদ থেকে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন তিনি। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
পরিবার জানায়, ডিএসপি-র প্ল্যান্ট গ্যারাজের কর্মী ছিলেন তারকনাথবাবু। তিনি ট্রেলার চালাতেন। সোমবার সকালের ‘পালি’তে (শিফ্ট) কোকআভেন ব্যাটারি বিভাগে ‘ডিউটি’ ছিল তাঁর। কাজ শেষে কারখানা থেকে দুপুরে ১টার মধ্যে তাঁর বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু তিনি ওই দিন বাড়ি ফেরেননি। মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। এর পরে, পরিবার দুর্গাপুরের স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় তারকনাথবাবুর খোঁজখবর করে। নঈমনগর এলাকায় তাঁকে সন্ধ্যায় দেখা গিয়েছে, বিশেষ সূত্রে এ খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন সেখানে যান। কথা বলেন মসজিদ কমিটির সঙ্গে। কিন্তু সেখানেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এর পরে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। এ দিকে, মঙ্গলবার সকালে সহকর্মীরা দেখেন, তারকনাথবাবুর মোটরবাইকটি রয়েছে কারখানার ভিতরেই। তাঁরা ওই বিভাগের বিশ্রাম-ঘরে (রেস্ট রুম) গিয়ে দেখেন, সেটি ভিতর থেকে বন্ধ। এর পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই ঘর থেকে তারকনাথবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।
মৃতের বোন সোমা সরকার জানান, তারকনাথবাবুর পাঁচ বছরের মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দাদা অবসাদে ভুগছিলেন, এমন কথা এক বারও বোঝা যায়নি। মনে হয় না, দাদার কোনও শত্রু ছিল। তবে নঈমনগরে দাদা সন্ধ্যার সময় কেন গিয়েছিলেন, সেটাই প্রশ্ন।’’ ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ জানায়, কারখানার ওই বিভাগের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ জোগাড় করে তারকনাথবাবুর গতিবিধি কী ছিল, তা জানা হবে। আপাতত অপমৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।