Sextortion

বিবস্ত্র ছবিতে প্রতারণার ফাঁদ, সতর্ক করছে পুলিশ

রান্নার গ্যাসের সংস্থার নাম করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ও মোবাইলে যাওয়া ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড জেনে প্রতারণা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৩
Share:

পুলিশের পোস্ট। নিজস্ব চিত্র

কখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে, কখনও অন্য কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিলই। সম্প্রতি নগ্ন ছবি বা যৌনতার দৃশ্য দেখিয়েও প্রতারণার ঘটনা নজরে আসছে। কালনা মহকুমায় বেশ কিছু এই ধরনের অভিযোগ মিলেছে। এই ধরনের প্রতারণা থেকে সতর্ক করতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘সেক্সটরসন’ বা যৌন দৃশ্য দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদের পা দিচ্ছেন অনেকে। ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কালনা শহরের এক যুবক বলেন, ‘‘মাঝে রাতে আচমকা একটি ভিডিয়ো কল আসে মোবাইলে। ধরতেই দেখি এক মহিলার নগ্ন ছবি। কিছুক্ষণ পরে ফোন আসে মোবাইলে। ফোন ধরলেই মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। নগ্ন ছবি দেখার খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। লোকলজ্জার ভয়ে কয়েক হাজার টাকা দিয়ে দিই।’’ দেবজ্যোতি কোলে নামে এক যুবকও ২৪ ডিসেম্বর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, তিনিও এই ধরনের প্রতারকদের খপ্পরে পড়ছিলেন। তবে টাকা দেননি। সবাইকে সাবধান থাকার কথাও বলেন তিনি। জেলার এক বিধায়কের কাছেও এই ভাবে টাকা চেয়ে ফোন করা হয় বলে অভিযোগ। পরের দিন তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। পুলিশের দাবি, অচেনা কারও বন্ধুত্বের ডাকে সাড়া না দেওয়া, অচেনা কোনও লিঙ্কে না যাওয়া বা যৌন দৃশ্য দেখলেই তাতে ক্লিক না করলে অনেকটাই বিপদ থেকে বাঁচা যেতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রোফাইলে তালা ঝোলানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

এর সঙ্গে রান্নার গ্যাসের সংস্থার নাম করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ও মোবাইলে যাওয়া ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড জেনে প্রতারণা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। কালনা, মন্তেশ্বর থানা এলাকায় প্রচুর মানুষ টাকা খুইয়েছেন এ ভাবে। মন্তেশ্বরের বাবুনপুর এলাকার তরুন মণ্ডলের অভিযোগ, ২৯ ডিসেম্বর তাঁর পরিবারের তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুধপুরের বাসিন্দা অমর দে, কালনা শহরের জাপট এলাকার বুদ্ধদেব দাসেরও একই অভিযোগ। কালনা ২ ব্লকের দফরপুর গ্রামের শ্যামল চক্রবর্তী একটি মিষ্টির দোকানের কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে গ্যাসের ভর্তুকি ঢুকেছে দাবি করে এক যুবক ফোন করেন। অন্য এক সহকর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে দেওয়া হয়। তবে শেষ মুহূর্তে সতর্ক হয়ে যাওয়ায় টাকা কাটতে পারেনি ওরা।’’ দিন দশেক আগে কালনা ২ ব্লকের এক শিক্ষাকর্মী দাবি করেন, তাঁর আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট থেকে হাতানো হয়েছে ১০ হাজার টাকারও বেশি। ব্যাঙ্কের তরফে ই-মেল পেয়ে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। কাঁসারিপাড়ার এক প্রাক্তন শিক্ষিকার ডেবিড কার্ডের নম্বর জেনে দু’দফায় ৫০ হাজার তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দিন চারেক আগে।

Advertisement

এসডিপিও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ পুলিশের দাবি, আগেও সাধারণ মানুষকে বিষয়টি নিয়ে সচেতন করা হয়েছিল। ফের একটি সচেতনমূলক শিবির করা চেষ্টা চলছে। সামাজিক মাধ্যমেও প্রচার করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement