পুলিশ আধিকারিক মেঘনাদের ছোড়া গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ছেন সোনু সিংহ (বাঁ দিকে), উদ্ধার হওয়া সোনা (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি এবং গুলিচালনার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সোনু সিংহকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় সুরজকুমার সিংহ নামে এক জনকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সোনুর সন্ধান মেলে। সেই অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকেও গ্রেফতার করে। সোনুকে গ্রেফতার করার কথা আদালতেও জানিয়েছে পুলিশ।
গত রবিবার রানিগঞ্জের একটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সাত ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতে সর্বস্ব লুটপাট করেন। কিন্তু বেরোতে গিয়েই তাঁরা পড়েন শ্রীপুর ফাঁড়ির বড়বাবু মেঘনাদ মণ্ডলের সামনে। পরে জানা যায়, কোনও কাজে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন মেঘনাদ। দোকানের কাছে এসেই তিনি বুঝতে পারেন কিছু একটা গোলমাল হয়েছে। পকেটে রাখা বন্দুক বার করে তিনি এগিয়ে যান দোকানের দিকে। ঠিক সেই সময় দোকানে ডাকাতি সেরে বেরিয়ে আসছিলেন ডাকাতেরা। বেরোতেই তাঁরা মেঘনাদের বন্দুকের সামনে পড়ে যান। দু’পক্ষে গুলির লড়াই চলে বেশ কিছু ক্ষণ। মেঘনাদের ছোড়া গুলি লাগে এক ডাকাতের কোমরে। বন্দুক ছিটকে পড়ে তাঁর হাত থেকে, তিনি লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। সেই অবস্থায় তাঁকে একটি বাইকে তুলে চম্পট দেয় ডাকাত দলটি। পুলিশ সূত্রে খবর, যাঁর কোমরে গুলি লেগেছিল, তিনিই সোনু। যাঁকে ইতিমধ্যেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেই খবর পুলিশ দিয়েছে আদালতকেও।
ডিসিপি ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, বিহারের সিওয়ান থেকে সোনুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুলিতে জখম সোনুকে প্রথমে ধানবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে তাঁকে নিয়ে বাংলায় চলে আসে পুলিশ। বর্তমানে তিনি বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করে বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে সোনাদানা-সহ লুটের মালপত্রও। একটি ব্যাগে প্রায় ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার সোনা ও হিরের গয়না পুরে দু’টি বাইকে করে চম্পট দিয়েছিলেন সাত জন। বাইক ছাড়াও ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা জামাকাপড় ভর্তি দু’টি ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে ৪২ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন এবং ২ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার গয়না ছিল। এ ছাড়াও আর একটি ব্যাগ এবং আসানসোলের মহিশিলা কলোনি থেকে লুট হওয়া চার চাকার গাড়িটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আসানসোল ও গিরিডি জেলার পুলিশ-সহ পার্শ্ববর্তী জেলার পুলিশ যৌথ ভাবে তদন্ত করে বাকি সদস্যদের গ্রেফতার এবং লুট হওয়া বাকি মালপত্র উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।