—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পশ্চিম এশিয়ায় অশান্ত পরিস্থিতির প্রভাব পড়তে পারে সোনার দামে, আশঙ্কা করছেন বিক্রেতা থেকে ক্রেতাদের অনেকে। আগামী বছরে বিয়ের তারিখ থাকা অনেকে এখন থেকে গয়না তৈরির বরাত দিচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন স্বর্ণ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।
পশ্চিম বর্ধমানের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্রহায়ন থেকে বিয়ের মরসুম শুরু হয়ে যায়। এ বার আগামী ফাল্গুনে বিয়ের তারিখ থাকা পাত্রপাত্রীদের পরিবারও ইতিমধ্যে গয়না তৈরির জন্য অগ্রিম দেওয়া শুরু করেছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে, তাঁরা সোনার দাম লাগামছাড়া হওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন।
জেলায় সব থেকে বেশি সোনার দোকান আছে রানিগঞ্জে। ‘জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন অব রানিগঞ্জ’-এর সভাপতি বলরাম রায় জানান, চলতি বছরের বাজেটে কেন্দ্র আন্তঃশুল্ক (কাস্টম ডিউটি) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। তাতে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৭০-৭১ হাজার টাকা থেকে কমে ৬৮ হাজার টাকা হয়েছিল। আবার তা বেড়ে ৭২,৮৫০ টাকা হয়ে যায় মঙ্গলবার। দাম দ্রুত বাড়তে থাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়।
আসানসোল বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুব্রত ঘাঁটি জানান, দাম কমবে, ক্রেতাদের মধ্যে এই রকম একটা ধারণা ছিল। তাতে অনেকে অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তরে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হলে প্রভাব বেশি পড়ে সোনার দামের উপরে। ইজ়রায়েল-ইরান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে তার ব্যতিক্রম হয়নি। ধনতেরসের জন্যও ক্রেতাদের সোনা কেনার তৎপরতা বাড়ছে। তবে সংখ্যায় বেশি, কিন্তু কম ওজনের গয়না কেনায় ঝোঁক বাড়ছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।
‘অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘ’-এর রাজ্যের সহ-সভাপতি পরিতোষ রায় জানান, দামের সঙ্গে প্রতি ভরি গয়না তৈরির জন্য সাড়ে ৬ হাজার টাকা মজুরি ও তিন শতাংশ জিএসটি যোগ হচ্ছে। এ সবের জেরে সামগ্রিক ভাবে প্রতি ভরি সোনার গয়নার দাম ৮০ হাজার টাকা ছুঁয়েছে। তা আরও বাড়তে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই অনেকে আগাম বরাত দিয়ে রাখছেন। তবে তাতে লাভ হচ্ছে বড় ব্যবসায়ীদের। কারণ, হঠাৎ দাম বেড়ে গেলে ছোট ব্যবসায়ীরা পুঁজির অভাবে চাহিদা পূরণ করতে পারবেন না, এমন আশঙ্কা ক্রেতাদের একাংশের। এর জেরে ছোট ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন।
হিমাদ্রিশেখর মুখোপাধ্যায় নামে এক ক্রেতার বক্তব্য, ‘‘যুদ্ধের কারণে দাম বাড়ার গুজব ছড়িয়েছে। এটা পুরোপুরি অস্বীকারও করা যাচ্ছে না।’’ অনুমিতা দাস নামে আর এক জন জানান, কিছু দিনের মধ্যে তাঁর বিয়ে। তাঁরা মনে করছেন, অন্য আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ানোর থেকে সোনা কেনায় খরচ করা এখনকার বাজারে বেশি যুক্তিযুক্ত। প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী গয়না কেনার ফাঁকে বলেন, ‘‘এক দিকে দাম বাড়ছে, অন্য দিকে ধনতেরসে কারিগরের মজুরিতে বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। এই সব কারণেই
সোনা কিনছি।’’