বর্তমানে এমনই অবস্থা স্টেডিয়ামের একাংশের। নিজস্ব চিত্র
শহরের একমাত্র স্টেডিয়াম। কিন্তু রানিগঞ্জের সেই রবিন সেন স্টেডিয়ামটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
বাসিন্দারা জানান, এই স্টেডিয়ামে নিয়মিত প্রাতর্ভ্রমণ ও সান্ধ্যর্ভ্রমণে যান অনেকেই। ‘মর্নিং ওয়াকার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর অন্যতম সদস্য রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান জানান, তাঁরা নিজেরাই কিছুটা জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখেন। কিন্তু তার পরেও, বেশির ভাগ এলাকায় আগাছা রয়েছে। রয়েছে, পার্থেনিয়ামের জঙ্গলও। একটি জিম থাকলেও, সেটির মেঝের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে গিয়েছে। সেখানেই অনেকে শরীরচর্চা করেন। কিন্তু জিমের বেশ কিছু যন্ত্র খারাপ। জিমের পাশেই বছর দু’য়েক আগে, শরীরচর্চার জন্য দু’টি কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সে দু’টি এখনও বন্ধ। শৌচাগারের অবস্থাও তথৈবচ। হাঁটার পথেও রয়েছে আগাছা। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। স্থানীয় বাসিন্দা বিক্রম ভগত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বহু বার সংশ্লিষ্ট মহলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও স্টেডিয়ামের হাল ফেরেনি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জে দু’দশক আগে প্রয়াত সিপিএম নেতা রবিন সেনের নামে এই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক রুনু দত্ত জানান, সাবেক রানিগঞ্জ পুরসভা শহরের সব ক’টি ক্লাবকে নিয়ে স্টেডিয়াম কমিটি তৈরি করে প্রায় দশ একর খাস জমিতে স্টেডিয়ামটি তৈরি করেছিল। তিনি জানান, স্টেডিয়ামটি শহরের বিভিন্ন স্তরের ক্রীড়াপ্রেমীদের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল। পুরসভা জমি অধিগ্রহণে সহায়তা করেছিল।
জানা গিয়েছে, স্টেডিয়ামের দেখভালের জন্য এক জন রক্ষী এবং এক জন মালি রয়েছেন। কিন্তু এত বড় স্টেডিয়াম চত্বর দেখভাল করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
স্টেডিয়ামটির খেলাধুলোর দীর্ঘ অতীত রয়েছে। রানিগঞ্জের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন খেলোয়াড় মলয় রায় জানান, ২০০৫-এ আইএফএ শিল্ড, মোহনবাগান, মহামেডানের প্রদর্শনী ম্যাচ এখানে হয়েছিল। কিন্তু জ়োনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন অস্তিত্ব হারানোর পরে, আর কোনও বড় খেলার আয়োজন এখানে হয় না। শুধু স্কুল-ক্রীড়া হয়। তাঁর দাবি, “দ্রুত স্টেডিয়ামের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ জরুরি।”
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ‘রানিগঞ্জ সিটিজেন্স ফোরাম’-এর সভাপতি রামদুলাল বসুও। তিনি বলেন, “পরিকাঠামোগত দিক থেকে রানিগঞ্জে পার্ক ও উদ্যান নেই। ফলে, নাগরিকদের জন্যও স্টেডিয়ামটির দিকে নজর দিক পুরসভা।” ইতিমধ্যেই তাঁরা বিষয়টি নিয়ে পুরসভার কাছে দাবিও করেছেন বলে জানান রানিগঞ্জ বণিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি রোহিত খেতান।
তবে আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “স্টেডিয়ামের আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।” এই পরিস্থিতিতে স্টেডিয়ামের শ্রী ফিরবে কবে, সে দিকে তাকিয়ে বাসিন্দারা।