দোমড়ায় এই রাস্তার মান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন গাড়ি চালকেরা। নিজস্ব চিত্র
সেতুর উপর গাড়ি চাপ কমাতে পাশে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। মাস দুয়েক আগে রাস্তাটি তৈরি হলেও সেখান দিয়ে কোনও গাড়ি যাতায়াত করছে না। চালকদের দাবি, নতুন রাস্তায় গাড়ি চালালেই বিপদে পড়তে হবে। কারণ, রাস্তাটি ভারী গাড়ি যাওয়ার উপযুক্ত নয়। যদিও পূর্ত দফতরের দাবি, রাস্তাটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গিয়েছে। গাড়ি চলাচল করলে কোনও সমস্যা হবে না।
পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কের কাঁকসার দোমড়ার কাছে কুনুর নদীর উপরে একটি সেতু রয়েছে। এই সেতুর মাঝের একাংশ বেশ কিছুটা বসে গিয়েছে। ২০১৭ সালে কাঁকসায় মুখ্যমন্ত্রীর সভার দিন পথচলতি মানুষজনের প্রথমে নজরে আসে এই বিষয়টি। তড়িঘড়ি প্রশাসনের তরফে সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। সেতুটির সংস্কারও করা হয়। কিন্তু তার মাস ছয়েক পরে ফের সেতুর ওই অংশ অনেকটাই বসে যায়।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর মাঝের অংশটি সংস্কার শুরু হয়। সেতুর নীচে ঢালাই দিয়ে মজবুত করা হয়। সেখান থেকে লোহার স্তম্ভ লাগিয়ে দেওয়া হয় বসে যাওয়া অংশটিতে। সেই সঙ্গে সেতুটি বিপজ্জনক হওয়ায় গাড়ি চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়। পূর্ত দফতরের তরফে সেতুর উপর দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল না করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। কিছু দিন ভারী গাড়ি, বিশেষ করে পাথর ও বালি বোঝাই গাড়িগুলিকে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়েও দেওয়া হয়।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটির অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। নতুন সেতুর জন্য রাজ্য সড়ক দফতরে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু যত দিন না নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে তত দিন পুরনো সেতুটি মেরামত করেই রাস্তাটি সচল রাখার পরিকল্পনা হয়েছে।
সেতুর উপর চাপ কমাতে পাশেই কুনুর নদীর উপরে একটি অস্থায়ী রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, নতুন রাস্তা তৈরি ও সেতুটি সংস্কার করতে প্রায় এক কোটি ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। সেই মতো রাস্তার কাজও হয়। মাস দুয়েক আগে সেই রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও গাড়ি সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছে না। পুরনো সেতুটি ধরেই চলছে সব গাড়ি।
চালকদের দাবি, রাস্তাটি মোরামের তৈরি। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখান দিয়ে যাতায়াত খুব বিপজ্জনক, বিশেষ করে ভারী পণ্যবাহী গাড়ির পক্ষে। রাস্তার পাশের অংশ বৃষ্টিতে ধসে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। এই রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ থেকে গাড়ির চালকেরা। গাড়ি চালক পবন সিংহ, শেখ মইদুলদের বক্তব্য, ‘‘আমরা কোন ভরসায় গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তায় নামাব? কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে সোজা নদীতে গিয়ে পড়তে হবে!’’
যদিও পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। নিয়মমাফিক নজরদারিও করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘চালকেরা কেন গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে চালাতে চাইছেন না জানি না। তবে রাস্তায় কোনও সমস্যা নেই। যে সমস্যা রয়েছে তা সংস্কার করা হবে।’’