জ্বলে না আলো। নিজস্ব চিত্র
আরও বেশি সংখ্যায় পর্যটক টানতে কালনার ১০৮ শিব মন্দির ও রাজবাড়ি চত্বরে রয়েছে ‘লাইট অ্যান্ড শ্যাডো’ ব্যবস্থা। কিন্তু রাজবাড়ি চত্বরে বেশ কিছু আলো জ্বলছে না, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এমনটাই জানিয়েছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-কে দেখতে বলেন।
মন্দিরের পাশেই রয়েছে রাজবাড়ি চত্বর। সেই চত্বরে রয়েছে প্রতাপেশ্বর মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, রাসমঞ্চ-সহ বেশ কিছু পুরাকীর্তি। রাতে এই চত্বরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রথমে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ ব্যবস্থা তৈরি করার পরিকল্পনা নেয় রাজ্যের পর্যটন দফতর। পরে কিছু পরিবর্তন এনে হয় ‘লাইট অ্যান্ড শ্যাডো’। কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অনুমতি নেওয়া-সহ নানা কারণে এই কাজে খানিকটা দেরি হয়। শেষমেশ, ২০১৪-য় সেই কাজ শেষ হয়। ৬৫ লক্ষ টাকা খরচে নানা জায়গায় বসানো হয় সিঙ্গাপুর থেকে আনা রকমারি আলো।
কিন্তু প্রশাসন সূত্রে খবর, এর পরে থেকে আর এই প্রকল্পে টাকা খরচ করেনি পর্যটন দফতর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ক্রমে নষ্ট হতে শুরু করে আলো, তার, স্ট্যান্ড-সহ নানা পরিকাঠামো। বর্তমানে যে সমস্ত আলোগুলি জ্বলছে, সেগুলিরও ঔজ্জ্বল্য অনেকটাই কমে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ১০৮ শিব মন্দির চত্বরের প্রথম ও দ্বিতীয় ‘বৃত্তে’ যথাক্রমে ২৪টি ও আটটি আলো থাকলেও জ্বলছে মাত্র তিনটি করে আলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গোটা ব্যবস্থাটাই আসলে অকেজো হয়ে পড়েছে। পুরো ব্যবস্থাটার খোলনলচে বদলাতে হবে।’’ তিনি জানান, রাজবাড়ি চত্বরের মধ্যে থাকা লালজি মন্দিরে এই ব্যবস্থাটিই আবার নেই।
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিধায়ক বিষয়টি জানান। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, এত দিন তাঁকে কেন বিষয়টি জানানো হয়নি। তবে বিধায়কের দাবি, বিষয়টি সরকারের নজরে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে বিষয়টি রাজ্য পর্যটন দফতরকে জানাব।’’ কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পের বিদ্যুৎ বিল পুরসভা মেটায়। পাশাপাশি, ছ’-সাত লাখ টাকা খরচে কিছু ছোটখাটো কাজও করেছি। কিন্তু গোটা ব্যবস্থাটি ঠিক করার সামর্থ্য পুরসভার নেই।’’
এই পরিস্থিতিতে গোটা ব্যবস্থাটি কবে পুরোপুরি ঠিক হবে, সে দিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী।