প্রতীকী ছবি
স্থানীয় স্তরে প্রথম দফায় বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা, মেমারি শহর এবং সাতটি গ্রামীণ এলাকা ‘লকডাউন’ করেছিল জেলা প্রশাসন। শনিবার ভাতারে ৫১ জন এবং জামালপুরে ৩৯ জন করোনা আক্রান্তের হদিস মেলার পরে এই এলাকাগুলিতেও ‘লকডাউন’-এর দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের বড় অংশ। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী শনিবারই জানিয়েছেন, বাছাই করা কিছু এলাকায় জেলাপ্রশাসন ‘লকডাউন’ করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে।
ডাক্তার, নার্স-সহ ৯ জন করোনা-আক্রান্তের হদিস মেলায় জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগ বাদে বাকি বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই করোনা-আতঙ্কে ভুগছেন এলাকার মানুষজন। জামালপুরের বিএমওএইচ আনন্দমোহন গড়াই জানান, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্য দফতর জামালপুরে ‘লকডাউন’ করার প্রস্তাব দেবে বলে ঠিক করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা একটি স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অঞ্জন মুখোপাধ্যায় থেকে শিক্ষিকা সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায়েরা দাবি করেন, ‘‘যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে জামালপুরে লকডাউনের প্রয়োজন রয়েছে।’’ তাপস ঘোষ, সুনীতা কোলেদের দাবি, ‘‘মোড়ে-মোড়ে আড্ডা বন্ধ করতে না পারলে সংক্রমণ রোধ করা যাবে না। কঠোর ভাবে লকডাউন করা দরকার।’’
‘লকডাউন’ প্রয়োজন বলে মনে করছেন পুলিশের কর্তারাও। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘জামালপুরে লকডাউন করার জন্য মহকুমা প্রশাসনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’ মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) সুদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসন থেকেও একটি প্রস্তাব এসেছে। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’ ভাতারের বাসিন্দদেরও অনেকে চাইছেন, গোটা ব্লক কিছু দিনের জন্যে ‘লকডাউন’ করা হোক। স্থানীয় শিক্ষক দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়, চিকিৎসক গৌতম চট্টোপাধ্যায়েরা মনে করেন, ‘‘অন্তত সাত দিন ‘লকডাউন’ করা দরকার। যে হারে করোনা-সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে শৃঙ্খল ভাঙা জরুরি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা শুভ্রাংশু বুট, ব্যবসায়ী রমেশ খান্ডেলওয়ালারা রবিবার বলেন, ‘‘আমরা খুব আতঙ্কিত। ‘লকডাউন’ করা হলে সংক্রমণ আর না-ও বাড়তে পারে।’’ হকার সাইফুল হোসেন, চাষি বাবলু শেখ, টোটো চালক সম্রাট হাজরাদের কথায়, ‘‘আমরা খুব মুশকিলে পড়েছি। লকডাউন হলে পেটে টান পড়ছে, আর বাইরে বেরোলে ঝুঁকি বাড়ছে।’’
ভাতারে আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই বাড়ি দু’টি এলাকায়। সে কথা মাথায় রেখে মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) পুষ্পেন্দু সরকার বলেন, ‘‘আংশিক এলাকা না সম্পূর্ণ এলাকা জুড়ে ‘লকডাউন’ প্রয়োজন, সেটা বিডিও, ওসি এবং বিএমওএইচ-রা ঠিক করবেন। তার রিপোর্ট দেখে জেলাশাসক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’