বিক্রি কমেছে, দাবি বিক্রেতাদের। নিজস্ব চিত্র
জেলায় সুফল বাংলার কোনও স্টল নেই। রেশন দোকান থেকে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশিকাও এখনও এসে পৌঁছয়নি বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা। এই পরিস্থিতিতে চড়া দামেই পেয়াঁজ কিনতে হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দাদের। কবে থেকে স্বল্পমূল্যের পেয়াঁজ মিলবে এখানে, নিশ্চিত করতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারা। নির্দেশিকা এসে গেলেই সরকার নির্ধারিত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হবে বলে আশ্বাস তাঁদের।
দামোদরের উল্টো দিকে বাঁকুড়ায় পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৫৯ টাকা কেজি দরে। কিন্তু দুর্গাপুরের মানুষ মঙ্গলবারও পেঁয়াজ কিনেছেন ১২০ টাকার আশপাশের দরে। স্বল্পমূল্যে পেঁয়াজ মিলতে পারে, এমন খবর শুনে এ দিন বাজারে গিয়েছিলেন আসানসোলের আপকার গার্ডেনের বাসিন্দা মলয় সরকার। তিনি বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি, পেঁয়াজ সেই ১৩০ টাকা!’’ এ দিন আসানসোলের নানা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১২০-১৩৫ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। বরাকরের বাসিন্দা শুভময় দাস বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডে পেঁয়াজের দাম কম শুনে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও দেখি, একই দর!’’
দুর্গাপুরে চণ্ডীদাস বাজারে আনাজ কিনতে এসে ডিএসপি-র প্রাক্তন কর্মী বাসুদেব রায় বলেন, ‘‘কবে যে দাম কমবে বোঝা যাচ্ছে না। পকেটের কথা মাথায় রেখে রান্নায় পেঁয়াজের পরিমাণ কমাতেই হচ্ছে।’’ তিনি জানান, তাঁর এক আত্মীয় বিষ্ণুপুরে থাকেন। তিনি মজা করে তাঁকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘আমাদের এখানেও সুফল বাংলার স্টল খোলা হলে সুবিধা হয়।’’ বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা কম কেনায় তাঁরাও অনেক কম পেঁয়াজ মজুত রাখছেন। বেনাচিতি বাজারের বিক্রেতা উত্তম পালের কথায়, ‘‘আগে দিনে দু’বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হত। এখন তিন দিন লাগছে তা শেষ হতে।’’
মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ন’শো রেশন দোকান এবং তিনশো স্বনির্ভর দলের মাধ্যমে জেলায়-জেলায় পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন। নানা জেলায় তা শুরু হলেও এখানে হচ্ছে না কেন? মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘বিষয়টি কৃষি বিপণন দফতরের অধীন।’’ জেলা কৃষি বিপণন দফতরের সহ-আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘সুফল বাংলার স্টল থেকে স্বল্পমূল্যের পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা। পশ্চিম বর্ধমানে সুফল বাংলার কোনও স্টল নেই। তাই সেই সুযোগ পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।’’ অস্থায়ী ভাবে সুফল বাংলার স্টল দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রির কোনও পরিকল্পনা আছে কি না, এ প্রশ্নে নির্দিষ্ট কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি দিলীপবাবু। তবে তিনি জানান, জেলার রেশন দোকানগুলি থেকে স্বল্পমূল্যের পেঁয়াজ বিক্রির কথা ঘোষণা করেছে সরকার।
রেশন দোকানগুলি থেকে কেন এখনও পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়নি, তা জানতে চাওয়া হলে জেলার খাদ্য নিয়ামক সুজিত হালদার বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। তাই এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ আসানসোল মহকুমা খাদ্য নিয়ামক সৌমিত্র মাইতি বলেন, ‘‘নির্দেশ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলার রেশন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা তপু তিওয়ারি জানান, পেঁয়াজ পাঠানো হলেই বিক্রির ব্যবস্থা করবেন তাঁরা।