গতিহারা বাঁকা, সাবজোলা খাল, সাফাই, ডেঙ্গি সচেতনতা নিয়ে ক্ষুব্ধ বর্ধমানের বাসিন্দারা

আর এক আবর্জনা ফেলার জায়গা বাঁকা নদী। কালো জলে আবর্জনা জমে বাঁকা নদী এখন স্থির। অথচ, ওই নদীর পাড়ে বসতি রয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫২
Share:

আবর্জনায় ভর্তি বাজেপ্রতাপপুরের সাবজোলা খাল।

খালের নাম সাবজোলা। তবে নামেই খাল। জল দেখা যায় না। বছরের পরে বছর সংস্কার না হওয়ায় নাব্যতা নেই বললেই চলে। খালের চারিদিকে আগাছা জন্মানোয় জলও রুদ্ধ। প্লাস্টিকের কাপ, থার্মোকলের অজস্র থালা-বাটি থেকে কাচের বোতল, সবই রয়েছে সেখানে। অথচ বর্ধমান শহরের নিকাশি ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই খাল। শহরের একাংশের ছোট-বড় সব নর্দমার যোগ রয়েছে এতে।

Advertisement

আর এক আবর্জনা ফেলার জায়গা বাঁকা নদী। কালো জলে আবর্জনা জমে বাঁকা নদী এখন স্থির। অথচ, ওই নদীর পাড়ে বসতি রয়েছে।

এই দুই ছবিই বলে দেয় শহরের নিকাশির হাল। শহরবাসীদেরও দাবি, এ সব খাল, নদীর সংস্কার হয় না বলেই ফি বছর ডেঙ্গি-আতঙ্কে কাঁপে বর্ধমান। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, “বর্ধমান শহরে গত কয়েক দিনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার পর্যন্ত শহরে ৩৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যাঁদের বেশির ভাগেরই বাঁকার ধারের ওয়ার্ডে বা সাবজোলা খালের ধারে বাড়ি।’’

Advertisement

সাবজোলা খালটি গিয়েছে লক্ষ্মীপুর মাঠ, বাজেপ্রতাপপুরের পাশ দিয়ে। রাজ কলেজের মোড় দিয়ে যাওয়া একটি বড় নর্দমার জল তাতে মেশে। ওই নর্দমাও আবর্জনায় ভর্তি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার আঁতুড়ঘর ওই নর্দমা। আবার কাঞ্চননগর, আলমগঞ্জ, ভাতছালা, কালীবাজার, কালনা গেটের পাশের যে এলাকা দিয়ে বাঁকা বইছে, তার দু’পাড়ের বাসিন্দাদেরও দাবি, “মশার উৎপাতে দিনের বেলাতেও জানলা খুলে রাখার উপায় নেই।’’

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসনের বাসিন্দারাও জানান, পুরো এলাকা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এক জনের ডেঙ্গিও ধরা পড়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘সারা বছর পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না। ডেঙ্গির পরেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’’ একই অভিযোগ মেলে শহরের অন্যত্রও। তাঁদের ক্ষোভ, “নিকাশি বেহাল। শহরের বুকে আবর্জনা পড়ে থাকাও নতুন নয়। কিন্তু ডেঙ্গির সময় বাসিন্দাদের সচেতন করতেও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা যায় না। বাইরে থেকে দু’টো প্রচারপত্র ছুড়ে দিলেই সব দায়িত্ব শেষ।’’

শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে একের পরে এক বহুতল গড়ে উঠছে। নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকছে রাস্তায়। সেখানেও মশাদের বংশবিস্তার ঘটছে। অথচ, পুরসভার তাতে কোনও ‘হোলদোল’ নেই বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। তাঁদের ক্ষোভ,, “স্বাস্থ্যকর্মী তো দূর, সাফাইকর্মীদেরও ঠিকঠাক দেখা যায় না। বহুতলের ঠিকাদারদের সতর্ক করবে কে?”

পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ সব অভিযোগে কান দিতে রাজি নন। পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অমিত গুহের কথায়, “মশা মারার ধোঁয়া, তেল স্প্রে করা হচ্ছে। তা হলে অসুবিধা কোথায়? নিকাশি নালা, জঞ্জালও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement