ধূমপানমুক্ত জেলাতেই প্রকাশ্যে উড়ছে ধোঁয়া

সেপ্টেম্বরের শেষে জেলা প্রশাসন জানায়, দার্জিলিং ও হাওড়ার পরে, রাজ্যের তৃতীয় জেলা হিসেবে এই জেলায় প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১৮
Share:

সিটি সেন্টারে। নিজস্ব চিত্র

জেলা প্রশাসন পশ্চিম বর্ধমানকে ‘ধূমপানমুক্ত জেলা’ ঘোষণা করেছে প্রায় আড়াই সপ্তাহ আগে। কিন্তু দুর্গাপুরের নানা এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে সর্বত্র আগের মতোই ধূমপান করছেন ধূমপায়ীরা।

Advertisement

সেপ্টেম্বরের শেষে জেলা প্রশাসন জানায়, দার্জিলিং ও হাওড়ার পরে, রাজ্যের তৃতীয় জেলা হিসেবে এই জেলায় প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা যাবে না। নিষেধাজ্ঞা ঠিক ভাবে পালিত হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য এক জন ‘নোডাল অফিসার’ থাকবেন। ধরা পড়লে নিয়ম অনুযায়ী, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বর ও লাগোয়া এলাকা ধূমপানমুক্ত করতে সরকারি বিধিনিষেধ আগে থেকেই ছিল। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরে ও আশপাশে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ধূমপানের অভিযোগ রয়েছে। ওই সব এলাকায় বেআইনি ভাবে বিড়ি, সিগারেট এবং অন্য তামাক জাতীয় সামগ্রী বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের জারি করা নতুন নিষেধাজ্ঞা কতটা কাজে আসবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

Advertisement

দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপ, বিধাননগর, সিটি সেন্টারের মতো বেশ কিছু জায়গায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিড়ি, সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। সেখানেই চলছে ধূমপান। অথচ চিকিৎসকেরা জানান, প্রত্যক্ষ ধূমপায়ীদের চেয়ে পরোক্ষ ধূমপায়ীদের ক্ষতি কম হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, ‘‘স্কুলের কাছে বিড়ি, সিগারেট বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানি। কিন্তু অনেকেই চা খেতে এসে ধূমপান করতে চান। তাই ব্যবসার স্বার্থে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করি।’’

তবে জেলা প্রশাসনের জারি করা নতুন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে দাবি তাঁর। সিটি সেন্টারের আদালত চত্বরের পাশেই ধূমপান করছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুদীপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় ধূমপান নিষিদ্ধ করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’’

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নির্দেশিকা কতখানি প্রচার করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ। জেলা প্রশাসন অবশ্য জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস ও লাগোয়া এলাকায় ধূমপান বন্ধ রাখতে এর কুফল বোঝাতে পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। এ বার কড়াকড়ি বাড়ানো হবে। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশো মিটারের মধ্যে তামাক জাতীয় সামগ্রী বিক্রি করা হলে আইন অনুযায়ী ২০০ টাকা জরিমানা করা হবে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের তরফে সচেতনতা প্রচারের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কোন কোন এলাকায় ধূমপান করা যাবে না, তা প্রচার করে জানানো হবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘শুরুতেই কড়াকড়ির পথে না গিয়ে প্রথমে সচেতনতা গড়ে তোলার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চলবে নজরদারি। পরে ধরপাকড় হবে বিভিন্ন জায়গায়। নেওয়া হবে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement