পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার দেউল এলাকায় চড়ুইভাতি। ছবি: বিপ্লব ভট্টাচার্য।
ডিসেম্বর শুরু হতেই চড়ুইভাতিতে মেতে ওঠে আমজনতা। তার উপরে সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে বড়দিনের ছুটি যদি পর পর পড়ে যায়, তা হলে তো পোয়াবারো! এ বছর সেই দিনগুলি হাতছাড়া করতে চায়নি আমজনতা। তার প্রমাণ মিলল সোমবার বড়দিনেও।
কাছে হোক বা দূরে, সারাদিনের জন্য পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে বেড়িয়ে পড়া। কেউ সমুদ্রের ধার, কেউ পাহাড়ি এলাকা, কেউ আবার চলে যান নির্জন জঙ্গলে বা জলাধারে নৌকাবিহার করতে। এ দিন সকাল থেকে মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করে কাঁকসার দেউল এলাকায়। এখানে অজয় নদের ধারে রয়েছে ইছাই ঘোষের দেউল। এখানে একটি বিনোদন পার্কও রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে মানুষের ভিড় খুব বেশি না হলেও, শীত পড়তেই ভিড় বাড়তে শুরু করে এখানে। এ দিন তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে অজয়ে পাড়ে চড়ুইভাতি করেন অনেকে। তবে পরিবেশের কথা মাথায় রেখে থার্মোকল, প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি, ডিজে বক্সের ব্যবহারও নিষিদ্ধ।
গত বছর থেকে জঙ্গলের ভিতরে পিকনিকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন দফতর। সেই মতো এ দিন দফতরের কর্মীরা জঙ্গলের পাশে নজরদারিও চালান। দেউল এলাকায় থাকা পার্কের পক্ষে সোমনাথ হাজরা জানান, এখানে মনোরঞ্জনের জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থাও করা হয়েছে। চড়ুইভাতির জায়গায় বহু পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অজয়ে যাতে কেউ না নামেন, সে জন্য বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। নদের পার্শ্ববর্তী এলাকাতে পুলিশের একটি ক্যাম্পও করা হয়েছে। চড়ুইভাতি চত্বরে সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিশদের নজরদারি চালাতে দেখা গিয়েছে এ দিন।
একই চিত্র আসানসোল শিল্পাঞ্চলেও। গির্জাগুলির পাশাপাশি, বড়দিনে এই শিল্পাঞ্চলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে মাইথন জলাধার। চড়ুইভাতি করার পাশাপাশি, নৌকাবিহারের আনন্দ কেউ হাতছাড়া করতে চান না। সে জন্য এখানে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকেরা আসেন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে এখানে রাজ্যের পক্ষ থেকে ‘ওয়েলকাম গেট’ বানানো হয়েছে। তেমনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। নৌকাবিহারে যাওয়ার সময়ে পর্যটকদের দেওয়া হচ্ছে লাইফ জ্যাকেট। জেলা পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ এ দিন পর্যটকদের সুরক্ষা ও সুবিধার জন্যে ‘হেল্পডেস্ক’ও চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্লাস্টিক দ্রব্য, থার্মোকলের ব্যবহার-সহ মাদক দ্রব্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসনের। এসিপি (কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল বলেন, “কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের নজরদারি সব জায়গাতে হয়েছে।”
সব মিলিয়ে বড়দিনে উৎসব মুখর জেলাবাসী।