দুর্ঘটনায় আহতদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের (বিএমওএইচ) বিরুদ্ধে। জামুড়িয়ার ধসল মোড় ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা এই অভিযোগ জানিয়ে একটি দাবিপত্র দিয়েছেন বিডিও-র কাছে। বিএমওএইচ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধসল মোড়ে রানিগঞ্জ থেকে উখড়া যাওয়ার পথে একটি মিনিবাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উল্টো দিক থেকে আসা কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক ধাক্কা মারে বাসটিতে। আহত হন বাসের ২৮ জন যাত্রী। এক জন বাসের মধ্যেই আটকে থাকেন। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাহাদুরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অ্যাম্বুল্যান্সটি ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশের সাহায্যে আহতদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে চার জন আহতকে পাঠানো হলে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অ্যাম্বুল্যান্সটি নিয়ে বাড়ি চলে যান বিএমওএইচ রাজেশচন্দ্র সাহা। সে দিন আর ফেরেননি। ফলে, তার পরে আরও ২৪ জন আহতকে নিয়ে গেলে এক জন চিকিৎসক ও চার জন কর্মী তাঁদের চিকিৎসা করতে হিমশিম খান বলে বাসিন্দাদের দাবি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জয়ন্তী রুইদাসের স্বামী বুদ্ধ রুইদাসের দাবি, এলাকায় বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন কর্মী সাহায্যে এগিয়ে না এলে সে দিন আহতদের চিকিৎসায় সঙ্কট হতো। অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় গুরুতর আহত যাত্রীদের গাড়ি ভাড়া করে ও পুলিশের জিপে করে জেলা হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
এলাকার বাসিন্দা মিলন মিশ্রের অভিযোগ, “বিএমওএইচ শুধু দুর্ঘটনার দিনে নয়, প্রতিদিনই অ্যাম্বুল্যান্সটি নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। দুর্ঘটনার দিন তিনি চলে যাওয়ার পরে ঘণ্টা তিনেক ধরে ফোন করা হলেও ধরেননি।’’ তিনি জানান, এর প্রতিবাদে তাঁরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে দাবিপত্র দিয়েছেন বিডিও-কে। স্বাস্থ্য দফতরেও তার প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।
বিএমওএইচ রাজেশচন্দ্রবাবু অবশ্য দাবি করেন, সে দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চার জনের বন্ধ্যাত্বকরণের অস্ত্রোপচার হয়। তা দেখাশোনার পরে বাড়ি যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনার খবর পান। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসারকে ফোন করে জানতে পারেন, ২৪ জন আহতকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘আমি সোজা জেলা হাসপাতালে চলে যাই। সেখানে আহতদের ভর্তি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। সে সবের ছবিও রয়েছে। বিডিও-কে সোমবার পাঠিয়েছি।’’ অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা একেবারে ভিত্তিহীন বলে তাঁর দাবি।
বিডিও অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিশদে তদন্ত করা হবে।”