দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে জাতীয় সড়কের উড়ালপুলে বন্ধ রাখা হয়েছে গাড়ি চলাচল। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহখানেকের বেশি সময় ধরে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে উড়ালপুলে। তার জেরে ধরতে হচ্ছে ঘুরপথ। ফলে, সময় ও জ্বালানি বেশি খরচ হচ্ছে, দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে জাতীয় সড়কের উড়ালপুল ধরে নিত্য যাতায়াত করা গাড়ি ও বাসের চালক-যাত্রীদের এমনই অভিযোগ। বাস না পেয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই উড়ালপুলে মেরামতির কাজ চলছে। তবে কবে থেকে গাড়ি চলাচল শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে আধিকারিকেরা কিছু বলতে চাননি।
গত ৩০ অগস্ট বিকেলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার গ্যাস ভর্তি ট্যাঙ্কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের গার্ডওয়ালে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। এর ফলে গার্ডওয়ালের কিছুটা অংশ ভেঙে যায়। উড়ালপুলের উপরের রাস্তার একাংশও ফেটে যায়। বিপদ এড়াতে মোটরবাইক ছাড়া অন্য যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ উড়ালপুল সাময়িক মেরামতির কাজ শুরু করেন। সপ্তাহ তিনেক ধরে কাজ চলে। তার পরে যান চলাচল শুরু হয় উড়ালপুলে।
সম্প্রতি ফের মেরামতি শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এর জেরে ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল। ফলে, সিটি সেন্টারের দিক থেকে স্টেশনের দিকে যেতে গেলে, ডিভিসি মোড় থেকে বাঁ দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে এমএএমসি উড়ালপুল দিয়ে জাতীয় সড়ক পেরোতে হচ্ছে। ফের সেখান থেকে উল্টো দিক ধরে আবার ডিভিসি মোড়ে ফিরতে হচ্ছে। বাসগুলি আবার এমএএমসি উড়ালপুল পেরিয়ে এমএএমসি কারখানার সামনের রাস্তা দিয়ে সোজা ডিপিএলের ৭ নম্বর গেটের কাছে গিয়ে বিসি রায় রোডে মিশছে। ফেরার সময়েও একই পথ ধরছে। ফলে, ডিভিসি মোড় থেকে শুরু করে ডিপিএলের ৭ নম্বর গেটের মধ্যবর্তী অংশের রাস্তায় বাস চলাচল করছে না। বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।
একটি বাসের চালক সুভাষ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘুরপথে যাতায়াতে সময় লাগছে। তেলও বেশি পুড়ছে।’’ মিনিবাস মালিকদের অন্যতম সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কাজল দে জানান, এর ফলে যাত্রী কম হচ্ছে। ঘুরপথে যাতায়াতে গড়ে দিনে কয়েকশো টাকার বেশি মূল্যের তেল পুড়ছে। ওই রাস্তার কিছুটা অংশ বেহাল। ফলে, যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ কাজলবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরে প্রায় ২৫ দিন ধরে উড়ালপুল মেরামতির জন্য সমস্যা হয়েছিল। এখন আবার দিন দশেক পেরিয়ে গেল। এ ভাবে বারবার উড়ালপুল বন্ধ হলে সবার সমস্যা।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে এক আধিকারিক জানান, আগের বার ভেঙে যাওয়া গার্ডওয়ালে ধাতব পাত লাগানো হয়েছে। এ বার কংক্রিটের কাজ হচ্ছে। ধাপে-ধাপে কাজ করতে হচ্ছে, যাতে কাঠামো পোক্ত হয়। টানা কাজ করা যাচ্ছে না। তাই সময় বেশি লাগছে। ঠিক কত দিনের মধ্যে উড়ালপুল ফের চালু করা যাবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু তিনি জানাতে পারেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।’’