প্রস্তুতি শুরু কংগ্রেসের। প্রতীকী চিত্র।
এক সময়ে মহকুমায় আধিপত্য ছিল তাদের। বেশ কিছু পঞ্চায়েতও দখলে থাকত। কিন্তু প্রায় দেড় দশক ধরেনানা কারণে কাটোয়া মহকুমায় কংগ্রেসের সংগঠনে ক্ষয় ধরেছে। তবে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী জয়ের পরে তাঁরা এই এলাকাতেও লড়াইয়ের খানিক অক্সিজেন পেয়েছেন, দাবি, কাটোয়ার কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের অনেকের। পঞ্চায়েত ভোটে মহকুমার সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলীয় নেতৃত্ব চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান তাঁরা।
কাটোয়ার কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে প্রতিটি পঞ্চায়েতে এক জন করে আহ্বায়ক করাহয়েছে। তাঁদের সামনে রেখেই পঞ্চায়েত ভোটে ঝাঁপাতে চলেছে দল। দলের বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে ছোট-ছোট সভা করা শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এরই মধ্যে, জেলা পরিষদের সব আসনে প্রার্থী বাছাই এগিয়ে গিয়েছে বলেও দাবি কংগ্রেস সূত্রের। পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতেও প্রতিটি আসনে তিন জন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঠিক করতে বলা হয়েছে। বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে, পরে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা।
এলাকার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের দাবি, কাটোয়া মহকুমার পাঁচটি ব্লকের মধ্যে কাটোয়া ১ ও ২ ব্লকে কংগ্রেসের কিছুটা রাজনৈতিক শক্তি এখনও রয়েছে। বাম জমানায় ওই দুই ব্লকের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত কংগ্রেসের দখলে ছিল। পরে অনেকেই তৃণমূলে চলে যাওয়ায়, পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়। দলের পুরনো বহু কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। তবে মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম ১ ব্লকে কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল বলে দাবি। সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস জেতায় অবশ্য মহকুমায় দলের কর্মীরা কিছুটা উজ্জীবিত হয়েছেন।
মঙ্গলকোট ব্লকে পঞ্চায়েতে ২৪৩টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪৫টি ও জেলা পরিষদের ৩টি আসন রয়েছে। কেতুগ্রাম ১ ব্লকে পঞ্চায়েতে ১৪৩টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৪টি ও জেলা পরিষদে ৩টি করে আসন রয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, ওই দুই ব্লকে প্রতিটি পঞ্চায়েতে মনোনীত আহ্বায়কদের মাধ্যমে প্রতিটি আসনে তিন জন করে প্রার্থীর তালিকা তৈরির জন্য ঘরোয়া বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলকোট ব্লক কংগ্রেস সভাপতি গুরুসদয় চৌধুরী বলেন, “আমরা প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য একপ্রকার প্রস্তুত আছি। প্রতিদিন ছোট-ছোট ঘরোয়া বৈঠক করা হচ্ছে।’’
কাটোয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের শহরের কর্মীরাও কাজ করবেন। ইতিমধ্যে আমরা শহরের নানা প্রান্তে পোস্টার দেওয়া শুরু করেছি।’’ কাটোয়া মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি জগদীশ দত্তের বক্তব্য, “শাসক দলকে হারানোর জন্য প্রতিটি আসনেই প্রার্থী দেব। বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে, উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মতো কাজ করা হবে।’’
যদিও কংগ্রেসের প্রস্তুতিকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “আমাদের এলাকায় বিরোধীদের সংগঠন নেই। ওরা যতই চেষ্টা করুক, উন্নয়নের স্বার্থে মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।’’