জায়গা নেই, ধান কেনা বন্ধ কাটোয়ায়

কাটোয়া ২ ব্লকে দুটি সিপিসি রয়েছে। একটি জগদানন্দপুর ও একটি পলসোনায়। দু’জায়গাতেই ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ধান নেওয়া বন্ধ। চাষি তপনবাবু বলেন, ‘‘বুধবার আমার ধান বিক্রির তারিখ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৩
Share:

ধান বিক্রির টাকায় বোরো মরসুমে আনাজ লাগানোর কথা ছিল গোপখাঁজির তপন সামন্তের। কিন্তু নাম নথিভুক্ত করেও ধান বিক্রি করতে পারেননি তিনি। চাষিদের অভিযোগ, কাটোয়া ২ ব্লকের সিপিসি (‌সেন্ট্রাল পারচেজ সেন্টার) থেকে ধান কেনা হচ্ছে না। ফলে রোজই এসে ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। খাদ্য দফতরের দাবি, চালকলগুলিতে ধান রাখার জায়গা না থাকাতেই এই সমস্যা।

Advertisement

কাটোয়া ২ ব্লকে দুটি সিপিসি রয়েছে। একটি জগদানন্দপুর ও একটি পলসোনায়। দু’জায়গাতেই ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ধান নেওয়া বন্ধ। চাষি তপনবাবু বলেন, ‘‘বুধবার আমার ধান বিক্রির তারিখ ছিল। এসে দেখি ধান নেওয়া বন্ধ। এখন ৩০ কুইন্টাল ধান কোথায় বিক্রি করব! ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া মানেো পুরো টাকা নষ্ট।’’ জগদানন্দপুরের রিক্তা নন্দী, গোপখাঁজির কানাইলাল দত্তদেরও ক্ষোভ, ‘‘সিপিসি যে ধান নিচ্ছে না তা বাজারে চাউর হয়েছে। এমন অবস্থায় খোলা বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে দামই পাব না। কুইন্টাল প্রতি ১৫৫০ টাকার বদলে ১৪২০ টাকায় লোকসানে বিক্রি করতে হবে।’’ কিন্তু দাম পাবেন না জেনেও চিকিৎসা বা মেয়ের বিয়ের প্রয়োজনে অনেকেই খোলা বাজারে ধান বিক্রি করছেন। আবার তার মাঝেও সিপিসি থেকে ফিরে যাচ্ছেন প্রতিদিন প্রায় ৫০ জন চাষি। জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম ১, ২, মেমারি ১, কাটোয়া ২ ব্লকের ধান কেনা কাজ ধুঁকছে। একটা করে ইউনিট চলছে সেখানে। আর গলসি ব্লকে আগেই বন্ধ হয়েছে ধান কেনা। পারচেজ অফিসার দেবদাস ঘোষ বলেন, ‘‘চাষিরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু আমাদেও হাত-পা বাঁধা।’’

খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এক দিকে তাদের গুদামে চাল মজুত করার জায়গা নেই। আবার এফসিআই ও চাল নিতে গড়মসি করছে। তাই এই সমস্যা। দফতরের নির্দেশিকা অনুসারে দু’মাসের বেশি চাল মজুত রাখা যায় না। অথচ জেলার অনেক গুদামেই তিন মাসের চাল পড়ে রয়েছে। চালকল মালিক সংগঠনের কাটোয়ার সভাপতি নন্দু আগরওয়ালা বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে এত চাল নষ্ট হবে। এ বছর এমনিতেই উৎপাদন বেশি। এই অবস্থায় নতুন করে ধান নেওয়া সম্ভব নয়।’’ সরকার চাল না নিলে ধান কেনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চালকল মালিক সংগঠনের জেলার কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেকও।

Advertisement

মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দেবলীনা ঘোষ বলেন, ‘‘জেলায় এফসিআইয়ের সেন্টার একটিই। অথচ দুশোর উপর চালকল রয়েছে। তাই ভিন জেলার এফসিআই সেন্টার যাতে এই জেলার চালকল থেকে চাল নিতে পারে সেই আবেদন করা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদ্য দফতরের দক্ষিণ ২৪ পরহগণার একটি গুদামে ১৫ হাজার টন চাল পাঠানোর কথা হয়েছে। জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মেহবুব মণ্ডলের দাবি, আগামী সপ্তাহ থেকে ধান কেনার গতি স্বাভাবিক হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement