চলছে পথ-কুকুরদের টিকাকরণ। — নিজস্ব চিত্র।
আচমকা মারা যাচ্ছে শ’য়ে শ’য়ে পথকুকুর। গত এক মাসে তিনশোটিরও বেশি পথকুকুরের মৃত্যু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভা এলাকায়। এমনটাই দাবি করেছেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। পথকুকুরদের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুর প্রশাসনও উদ্বিগ্ন। এত কুকুরের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছেন জেলা প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁরা মৃত কুকুরের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি তাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, গত এক মাসে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে একের পর এক পথকুকুরের মৃত্যু হয়েছে। কালনা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েল বলেন, ‘‘গত এক মাস ধরে পথকুকুরদের মৃত্যু হচ্ছে এখানে। গত ১৫ দিনের মধ্যে প্রায় দেড়শো কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। এক মাসের হিসাব ধরলে সংখ্যাটা তিনশো ছাড়িয়ে যাবে।’’ পথকুকুরদের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে কালনার পশুপ্রেমীরাও বেশ উদ্বিগ্ন। তাঁরা বিষয়টি প্রথমে পুর কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। পুর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেলা প্রাণীসম্পদ দফতর খবর পায়। তাদের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় পথকুকুরদের অবস্থা খতিয়ে দেখেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপনও। ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিধান বিশ্বাস-সহ অন্য আধিকারিকেরা। পথকুকুরদের মৃত্যু কী কারণে, তা জানতে পশু চিকিৎসকেরা একটি মৃত কুকুরের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। অসুস্থ থাকা পথ কুকুরদের চিকিৎসাও করেন তাঁরা। কুকুরদের টিকাকরণের ব্যাপারেও উদ্যোগী হন তাঁরা।
প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, কোনও ছোঁয়াচে রোগের কারণে কুকুরগুলির মৃত্যু হচ্ছে। ওই দফতরের উপ অধিকর্তা সোমনাথ মাইতি বলেন, “আমাদের প্রাথমিক অনুমান ‘ক্যানাইন ডিসটেম্পার’ নামের ছোঁয়াচে রোগের কারণেই পথ কুরদের মৃত্যু হয়েছে। এই রোগ এক কুকুর থেকে অন্য কুকুরে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে পথকুকুরদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে ক’টি কুকুর মারা গিয়েছে তা-ও সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।’’
কালনা-১ ব্লক প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিক দেবব্রত তোলা বলেন, “সোমবার ১৯টি পথ কুকুরকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আলাদা একটি দল তৈরি করা হয়েছে পথকুকুরদের টিকা দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি ৩টি কুকুরের চিকিৎসা করা হয়।” এ ছাড়াও একটি মৃত কুকুরের দেহের ময়নাতদন্ত করার পাশাপাশি তার দেহের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবব্রত।