Burdwan

হাইকোর্টের রায়ে চিন্তায় উদ্যোক্তারা

সোমবার মণ্ডপে দর্শকদের ‘নো-এন্ট্রি’র যে রায় কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, তাতে চিন্তায় পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা-আবহে প্রথম থেকেই পুজো নিয়ে নানা প্রশ্ন, সংশয় ছিল। তার মধ্যে জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দু’হাজারের উপরে বারোয়ারি পুজো বেড়েছে এ বার। সোমবার মণ্ডপে দর্শকদের ‘নো-এন্ট্রি’র যে রায় কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, তাতে চিন্তায় পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, অনেক মণ্ডপ রাস্তার ধারে।

Advertisement

সেখানে ১০ মিটার দূরত্ব রেখে ব্যারিকেড দেওয়া মানে রাস্তা প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হবে। আবার কারও প্রশ্ন, মণ্ডপ দর্শকশূন্য হলে সরকারি অনুদানের মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার বিলি করা হবে কাদের। জেলাশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য জানান, সোমবার সন্ধ্যায় পর্যন্ত তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। নির্দেশ এলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৯৭০টির মতো পুজো কমিটি রাজ্য সরকারের অনুদান পেয়েছিল। এ বছর এক ধাক্কায় পুলিশের খাতায় নাম তুলে ৩,১৫৪টি পুজো কমিটি সরকারের অনুদানের চেক পেয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেকেরই দাবি, এত দিন সরকার নতুন পুজোর অনুমতি দেওয়া নিয়ে ‘কঠোর’ অবস্থান নিত। এ বছর রাজ্য সরকার ১০ বছর ধরে পুজো হচ্ছে, এমন উদ্যোক্তাদের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আবার করোনা-আবহে সরকারের অনুদানের ৫০ হাজার টাকা পেতে উদ্যোক্তারাও অনুমতি নিতে উৎসাহী হন। সব মিলিয়ে এক লাফে দু’হাজারের বেশি পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। জেলায় পুজোর অনুদান বাবদ ১৫ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি ওই অনুদান নিয়েও হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। সেখানে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের পিছনে খরচ করার কথা বলেছে হাইকোর্ট। প্রতিটি পুজো কমিটিকে তার হিসেব পুলিশকে জমা দিতে হবে। পুলিশ তা খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে জমা দেবে। তার সঙ্গেই এ দিন মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশে ‘নো-এন্ট্রি’ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। ছোট মণ্ডপ হলে পাঁচ মিটার, বড় পুজো হলে দশ মিটার দূরে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে দর্শক নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। একাধিক পুজো কমিটির প্রশ্ন, মণ্ডপে ১৫ থেকে ২৫ জন থাকতে পারবেন বলা হচ্ছে। কিন্তু অষ্টমী পুজো, সন্ধিপুজো, কুমারী পুজোর বিধি অনুযায়ী জোগাড় করতেই অনেক লোক লাগে। এ বার সে ক্ষেত্রে মুশকিল হবে। আবার মণ্ডপে দর্শক না থাকলে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার দেওয়া সম্ভব কী ভাবে, সে প্রশ্নও উঠেছে। তবে কিছু কিছু পুজো উদ্যোক্তা ঠিক করেছেন, মণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে ‘স্যানিটাইজ়ার টানেল’ বসাবেন, দর্শকদের হাতে মাস্ক তুলে দেবেন। বাকি মাস্ক পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বিলি করা হবে।

বর্ধমান শহরের লাল্টু স্মৃতি সঙ্ঘ ‘থিম’ নির্ভর পুজো করছে এ বার। পুজোর অন্যতম কর্তা তন্ময় সামন্ত বলেন, “আমাদের পুজোর কথা ছড়িয়ে গিয়েছে। দর্শকেরা আসতে শুরু করেছেন। হাইকোর্টের রায় মানতেই হবে। কিন্তু মণ্ডপের বাইরে দর্শক কী ভাবে সামলাব বুঝতে পারছি না।’’ কাটোয়ার একটি পুজো কমিটির কর্তা বিকাশ সাহা, কালনার অমিত নন্দীদের কথায়, “ফের নতুন পরিস্থিতি। চিন্তা তো হচ্ছেই, তবে প্রশাসন কী নির্দেশ দেয়, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’’ বড়শুলের জাগরণী ক্লাবের সভাপতি পিন্টু পাল বলেন, ‘‘করোনার হাত মানুষকে বাঁচাতে হাইকোর্ট বা প্রশাসনের যে কোনও রকমের নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি। সমস্যা হলেও আমরা নির্দেশ মানব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement