নবাবহাটের ‘বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্র’। নিজস্ব চিত্র
ফুটপাত ‘দখল’ করে তৃণমূলের ‘বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্র’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।
বর্ধমানের নবাবহাট মোড়ে জিটি রোডের ফুটপাতের প্রায় ফুট দশেক জায়গায় ‘বেদখল’ করে প্রায় এক বছর ধরে বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্রের নামে সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিস খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথকুমার মালিকের দাবি, ‘‘ওটা অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসন চাইলে, ভেঙে দিতে পারে।’’
বর্ধমান শহরের গোলাপবাগ মোড় থেকে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তায় নবাবহাট মোড়ের ট্রাফিক সিগন্যালের ঠিক বাঁ দিকেই রয়েছে ওই বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্র। নীল রঙের বোর্ডের উপরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়কের ছবি রয়েছে।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, গত বছর বিধানসভা ভোটের পরে, বাঁশের কাঠামোর উপরে কাপড় ও ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ওই বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়। মাঝে মধ্যে সেখানে বিধায়ক নিশীথকুমার মালিক আসেন। বাকি সময়টা সেখানে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বসে থাকেন। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ফুটপাতের ওই অংশের মেঝে তৈরির কাজ চলছে।
জেলা কংগ্রেসের যুব সভাপতি গৌরব সমাদ্দারের দাবি, ‘‘তৃণমূলের বিধায়ক জিটি রোডের ফুটপাত দখল করবেন, এতে অস্বাভাবিক কি আছে? সারাদিন ওখানে তৃণমূলের কর্মীরা আড্ডা মারেন। সহায়তা কেন্দ্রের নামে আসলে ওটা তৃণমূলের পার্টি অফিস।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের অভিযোগ, ‘‘মানুষের জায়গা, সরকারের জায়গা বিধায়ক দখল করছেন! পুলিশের উচিত, ওই কেন্দ্রে ভেঙে দেওয়া।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক অভিজিৎ তা-এর মন্তব্য, ‘‘এত জায়গা থাকতে জিটি রোড দখল কেন? চলাচলের রাস্তাও কি তৃণমূল দখল করে নেবে ধীরে ধীরে?’’ বিধায়কের দাবি, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে বিধায়ককে কাছে পেয়ে তাঁদের সমস্যার কথা সহজে জানাতে পারেন, সে জন্যই ‘বিধায়ক সহায়তা কেন্দ্র’ চালু করা হয়েছে। ওটা অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসন চাইলে, ভেঙে দিতে পারে।’’
যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিধায়কের ‘অনুগামীদের’ একাংশ সেটি তৈরি করেছেন। বছরভর তাঁরাই সেখানে চেয়ার নিয়ে নিয়ে বসে থাকেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখে এ ব্যাপারে মন্তব্য করব।’’
এসডিও (সদর উত্তর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। জায়গাটি পূর্ত দফতরের। আমি তাদের বিষয়টি খোঁজ নিতে বলছি।’’ পূর্ত দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (১) সুজয় রায় প্রতিহার বলেন, ‘‘ঘটনাটি খোঁজনিয়ে দেখছি।’’