দুর্গাপুরে কংগ্রেসের কর্মসূচি। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রেক্ষাপটে বার বার কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্বকে তৃণমূলের সঙ্গে এক পঙ্ক্তিতে বসা নিয়ে তোপ দেগেছেন। যদিও, বিরোধীরা সে সব মন্তব্যে আমল দেয়নি। এ বার এই তরজার রেশ দেখা গেল দুর্গাপুরেও। উপলক্ষ, গত পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীদের ‘কালা দিবস’ পালন।
২০১৭-র ১৩ অগস্ট দুর্গাপুর পুরভোট হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাসের জেরে তৃণমূল পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডেই জিতেছিল। তৃণমূল যদিও সে অভিযোগ মানে না। এই প্রেক্ষাপটে, রবিবার ফের দিনটি পালন করেছে বিরোধীরা। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে তরজা।
‘কালা দিবস’ করতে গিয়ে কংগ্রেস বেনাচিতির পাঁচমাথার মোড়ে ‘গণতন্ত্রের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান’ নাম দিয়ে কর্মসূচি নেয়। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “২০১৭-র এই দিনে দুর্গাপুরে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল তৃণমূল। সে স্মৃতিতেই এই কর্মসূচি। এক বছর আগে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য পুরভোট করানো হচ্ছে না।” সিপিএম ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে প্রতিবাদ মিছিল করে। আজ, সোমবার পুরসভার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে বলে জানান দলের জেলা নেতা পঙ্কজ রায় সরকার।
যদিও, কংগ্রেস ও সিপিএমের এ সব কর্মসূচিকে আমল দিচ্ছে না রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। শুভেন্দু সাম্প্রতিক অতীতে বার বার বলেছেন, ‘সিপিএম, কংগ্রেস ফিশ ফ্রাই, বিরিয়ানি খাচ্ছে তৃণমূলের সঙ্গে। সিপিএম আর কংগ্রেসে থেকে তৃণমূলের বিরোধিতা সম্ভব নয়।’ পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ভোটে ‘হিংসার’ প্রসঙ্গ তুলে জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএমের ‘সখ্য’ নিয়ে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও।— দলের এই অবস্থান মেনেই এ দিন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এখানে সিপিএম, কংগ্রেস নানা কথা বলছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর পটনা, বেঙ্গালুরু, দিল্লিতে দোস্তি করছে। এদের এ জন্যই কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। আমরা আমাদের মতো কর্মসূচি নিচ্ছি। আমরাই একমাত্র তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরোধিতা করছি।” যদিও, সিপিএম নেতা পঙ্কজের দাবি, “দেশ ও রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে। তা ছাড়া, তৃণমূল কোনও গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। ফলে, বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে ওঁদের অবস্থান কী হবে, সেটা ওঁদের ব্যাপার।” কংগ্রেসও চন্দ্রশেখরের বক্তব্যে আমল দেয়নি। এ দিকে, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিরোধীদের জোটকে বিজেপি ভয় পেয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলছে।” পাশাপাশি, তাঁর সংযোজন: “দুর্গাপুরে সন্ত্রাস হয়নি। বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই এখন নানা কিছু করতে হচ্ছে ওঁদের।”