দুর্ঘটনাস্থলে: দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারের পিছনে এই গাড়িটিই ধাক্কা মারে। বুদবুদে। নিজস্ব চিত্র।
২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে ছিল ডাম্পার। সেটির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারল রাজ্য পুলিশের ১১ নম্বর ব্যাটালিয়নের একটি গাড়ি। তাতে ডাম্পারটি এগিয়ে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। তার জেরে মৃত্যু হয় শুভদীপ দত্ত (৩১) নামে এক যুবকের। পাশাপাশি, ওই ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে, পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের কোটা মোড়ের ঘটনা।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৭টায় পুরুলিয়ার ছড়রা থেকে ১১ নম্বর ব্যাটালিয়নের অমিতাভ সিংহ এবং সুমন্ত দাস নামে দুই পুলিশকর্মী গাড়িতে করে ব্যারাকপুরে যাচ্ছিলেন। সে সময়ে কোটা মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওই দুই পুলিশকর্মী এবং ডাম্পারের ধাক্কায় শুভদীপ গুরুতর জখম হন। বুদবুদ থানার পুলিশকর্মীরা ঘটনার খবর পেয়ে তিন জনকেই উদ্ধার করে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শুভদীপকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। দুই পুলিশকর্মীকে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। তাঁরা আপাতত বিপন্মুক্ত বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুই পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। মৃত যুবক পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজে যুক্ত একটি ঠিকা সংস্থায় কাজ করতেন। ডাম্পারটিকে আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভদীপের বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীতে।
এ দিকে, ঘটনার পরে গাড়ির চালকদের একাংশের অভিযোগ, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় দিনভর ট্রাক, ডাম্পার দাঁড়িয়ে থাকে। এর ফলে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। মাস দু’য়েক আগে, পানাগড়ের বাসিন্দা সৌরভ মুখোপাধ্যায় মোটরবাইকে করে দুর্গাপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনিও জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারেন। পায়ে চোট লাগে তাঁর। তিনি বলেন, “প্রায় সময়ই রাজবাঁধ থেকে বিরুডিহা এই এলাকায় হোটেলের পাশে ট্রাকগুলি বিপজ্জনক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। বিশেষ করে রাতের দিকে। পুলিশের আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া, বাঁশকোপা টোল গেট পার করেও অনেক সময় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে।”
যদিও কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানান, পুলিশের তরফে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া, গাড়ি দাঁড় করালে উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।’’ এ দিনের দুর্ঘটনা যেখানে ঘটেছে, সে এলাকায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সেখানেই ডাম্পারটি দাঁড়িয়েছিল। ডিসি (পূর্ব) বলেন, “আমরা আরও নজরদারি বাড়াব। ওই এলাকার পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হবে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।