Woman Tortured

প্রৌঢ়াকে ঘরে ঢুকে নির্যাতন, ধৃত ৪ ভাতারে

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলার ছোট মেয়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাতার শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

প্রতীকী চিত্র

বাড়িতে ঢুকে এক আদিবাসী প্রৌঢ়ার উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ভাতারের ওরগ্রামের পাহাড়পুরে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ স্থানীয় মোড়ল-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। মহিলা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। অভিযোগ, মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর স্বামীও আহত হয়েছেন। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগকারিণী পঞ্চাশোর্ধ্ব। বাড়িতে ঢুকে তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ জানায়, ধৃত সোম মুর্মু, মঙ্গল বেসরা ওরফে কাঠি ও সুনীল মাড্ডির বাড়ি পাহাড়পুর এলাকায়। আর এক ধৃত ডিঙ্গা মুর্মু ওরফে মাড্ডির বাড়ি ওরগ্রামের লাইনপাড় এলাকায়। বুধবার রাতে বাড়ি থেকে অভিযুক্তদের ধরে ভাতার থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মহিলার অবস্থা স্থিতিশীল।

Advertisement

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলার ছোট মেয়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসে। অভিযোগ, সোম মুর্মু নির্যাতিতার মেয়েকে গ্রামছাড়া করার নিদান দেন। মেয়েকে ভাতার থানার রাধামোহনপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মহিলা। কয়েকদিন আগে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে বাড়িতে আনার জন্য অনুমতি চাইলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারই রটে যায়, রাধামোহনপুর থেকে মেয়েকে বাড়িতে আনা হয়েছে।

অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ওই মহিলা, স্বামী ও দুই নাতিকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। তখন অভিযুক্তেরা বাড়িতে ঢোকে। সোম ঘরে ঢুকে মহিলার কাছে জানতে চান, মেয়েকে বাড়িতে আনা হয়েছে কি না? জবাবের অপেক্ষা না করেই মহিলার স্বামীকে মারধর করা শুরু করেন তিনি। বাকি তিন জন মহিলাকে টেনে বাইরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন, মারধর করতে থাকে। এর পরে চার জন মিলে যৌন নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা চলে গেলে পড়শিরা মহিলাকে প্রথমে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে। বিশেষ পাহারায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে আটকে রাখা, পদের অপব্যবহার করে যৌন নির্যাতন, গণধর্ষণ, মারধর ও হুমকি দেওয়ার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। আদিবাসীদের একটি সংগঠনের কর্তা, ভাতারের স্বর্ণচালিতা গ্রামের মঙ্গল সরেনের বক্তব্য, ‘‘মহিলাদের উপরে অত্যাচার বা নির্যাতন আমরা কোনও ভাবে সমর্থন করি না। ঘটনা সত্যি হলে, অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement