অজয়ের গর্ভ থেকে উদ্ধার বহু প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি। — নিজস্ব চিত্র।
অজয় নদের চর থেকে উদ্ধার হল পাল-সেন যুগের ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তি। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের নারেঙ্গা গ্রামের কাছে অজয় নদের চর থেকে উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি কেতুগ্রাম থানার পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। প্রাচীন মূর্তিটি কলকাতার সংগ্রহশালায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
সাধারণত শীতের মরসুমে অজয় নদের জল কমে যায়। এই সময়ে অজয়ের চর থেকে নানা দেবদেবীর মূর্তি উদ্ধার হওয়ার ঘটনা নতুন কোনও ব্যাপার নয়। গত সোমবার নারেঙ্গা এলাকার কয়েক জন অজয় নদের চরে ঘুরছিলেন। সেই সময় তাঁরা বালি চাপা অবস্থায় বিষ্ণুমূর্তিটি দেখতে পান। ফুট তিনেক উচ্চতার কালো পাথরের উপর খোদাই করা শঙ্খ, চক্র, গদাধারী দণ্ডায়মান বিষ্ণুমূর্তিটি অজয়ের গর্ভ থেকে গ্রামে তুলে এনে পূজার্চনা শুরু হয়। সে কথা চাউর হতেই প্রচুর লোকজন জড়ো হন মূর্তিটি দেখার জন্য। খবর পেয়ে চলে আসে কেতুগ্রাম থানার পুলিশও। পরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে মূর্তিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কেতুগ্রামের আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মূর্তিটি কলকাতার সংগ্রহশালায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’’ কাটোয়ার ইতিহাসবিদ স্বপন ঠাকুর মঙ্গলবার মূর্তিটি দেখার পর বলেছেন, ‘‘নির্মাণশৈলী দেখে মনে হচ্ছে বিষ্ণুমূর্তিটি পাল-সেন যুগে নির্মিত হয়েছিল। সেই সময় এই ধরনের বিষ্ণুমূর্তিকে ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তি বলা হত। কেতুগ্রামে উদ্ধার হওয়া বিষ্ণুমূর্তিটি আনুমানিক এক হাজার বছরের পুরনো বলেই মনে হচ্ছে।’’
ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানের প্রাচীন জনপদগুলির মধ্যে অন্যতম মঙ্গলকোট। এই এলাকায় রাজা বিক্রমাদিত্যের সময়ের প্রাচীন নিদর্শন এখনও দেখতে পাওয়া যায়। মঙ্গলকোটে অজয়ের চর থেকে এখনও উদ্ধার হয় বহু প্রাচীন দেবদেবীর মূর্তি। জলের তোড়ে ভেসে মঙ্গলকোট থেকে এই ত্রিবিক্রম বিষ্ণুমূর্তিটি কেতুগ্রামের নারেঙ্গা গ্রামের কাছে চলে এসেছে বলে অনুমান করছেন বাসিন্দারা। কলকাতার সংগ্রহশালায় মূর্তিটি পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।