পাঁচিলের কাজ পরিদর্শনের সময়ে ডিএসপির আধিকারিকদের ঘিরে বচসা। নিজস্ব চিত্র।
পাঁচিলের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে বস্তিবাসী ও স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সোমবার দফায় দফায় বচসা বাধল দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) আধিকারিকদের। বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে যান।
ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানার সম্প্রসারণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ কাজ শেষ হওয়ার কথা। সে জন্য জমি জোগাড় করতে হাজার হাজার দখলদার উচ্ছেদে নোটিস পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেই বাসিন্দারা পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিএসপির পড়ে থাকা ফাঁকা জমি ঘেরার কাজে অগ্রাধিকার দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সংস্থার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের জন্য পাঁচিলের কাজ শেষ না হলে পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র পাওয়া যায় না। কিন্তু ফাঁকা জায়গা ঘিরতে গিয়েও বার বার এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সোমবার ফের তেমন পরিস্থিতির মুখে পড়লেন ডিএসপি আধিকারিকেরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তামলা, চাষিপাড়া এলাকায় নির্মীয়মাণ পাঁচিলের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকেরা। অভিযোগ, তাঁদের দেখে প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা তাঁদের আশ্বস্ত করেন, আপাতত তাঁদের বসবাসের জায়গায় পাঁচিল দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও তাঁরা ক্ষোভ জানাতে থাকায় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। পাঁচিলের কিছুটা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। এর পরে তৃণমূলের হিন্দি প্রকোষ্ঠের ব্লক সভাপতি দীনেশ যাদবের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা সেখানে যান। তাঁদের সঙ্গেও বচসা হয় ডিএসপি-র আধিকারিকদের। শেষে তাঁরা সেখান থেকে চলে যান।
স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম সাহানির দাবি, “আমার বাড়ির একটি ঘর পাঁচিল দিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। বার বার অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। তাই পাঁচিলের কিছুটা ভেঙে দিয়ে যাতায়াত করছি। এর সুরাহা না হলে আমরা পাঁচিল দিতে দেব না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলার বক্তব্য, “আধিকারিকেরা আজ এসেছিলেন। আমাদের বলা হচ্ছে, পাশের ফাঁকা জায়গায় উঠে যেতে। কী ভাবে সেটা সম্ভব? আমাদের বাড়ি পাঁচিলের বাইরে বার করে দিতে হবে। তা না হলে পাঁচিলের কাজ বন্ধ থাকবে।” তৃণমূল নেতা দীনেশ দাবি করেন, এমন ভাবে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে যাতে অনেকের ঘর থেকে ঢোকা-বেরোনোয় সমস্যা হচ্ছে। আগুন লেগে গেলে দমকল ঢুকতে পারবে না। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকবে না। তাঁর কথায়, “চার দিক থেকে কার্যত বস্তি ঘিরে ফেলা হচ্ছে পাঁচিল দিয়ে। বস্তিবাসীরা আমাদের খরব দেন। তাই আমরা আসি। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পাঁচিল দেওয়া যাবে না।”
ডিএসপির মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায় বলেন, “একটি ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। তবে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনেই নিজের জায়গায় পাঁচিল দেওয়ার কাজ করছেন।”