তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রাত বাড়লেই ছাদ থেকে ‘অস্বাভাবিক শব্দ’ ভেসে আসছে। এমনটাই দাবি দুর্গাপুরের বিধাননগরে অবস্থিত একটি নার্সিং কলেজের হস্টেলের আবাসিকদের একাংশের। এ নিয়ে তদন্তের দাবিতে সোমবার বিকেল ৪টে থেকে এক ঘণ্টা হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, আগামী ৯ অগস্ট প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছেন না তাঁরা। এ দিকে, হস্টেল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্যই এ সব রটাচ্ছেন আবাসিক পড়ুয়াদের একাংশ।
দুর্গাপুরের শোভাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের নার্সিংয়ের পড়ুয়াদের রাখার জন্য বিধাননগরের একটি ভবনে হস্টেল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কলেজের প্রথম বর্ষের ৯৩ জন আবাসিক থাকেন। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, ‘অস্বাভাবিক’ আওয়াজের জেরে রাতে ঘুমনো যাচ্ছে না। নিরাপত্তারক্ষীকে বলা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। হস্টেলের আবাসিক জেসমিন খাতুন বলেন, ‘‘বিভিন্ন রকম অস্বাভাবিক শব্দ কানে আসছে। কর্তৃপক্ষকে বললে উল্টে বলা হচ্ছে, পরীক্ষার ভয়ে আমরা মিথ্যা অভিযোগ করছি। কেন এ সব হচ্ছে, তা খুঁজে বার করা হচ্ছে না।’’ আর এক আবাসিক জেসমিন পারভিন বলেন, ‘‘ছাদে জুতোর ছাপের ছবি রয়েছে আমাদের কাছে! অথচ, অভিযোগ করতে গেলে আমাদের বক্তব্য হেসে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বর্ণালী মণ্ডল নামে আর এক পড়ুয়ার দাবি, ‘‘হয় হস্টেল পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে, কেন এ সব হচ্ছে, তা খুঁজে বার করতে হবে।’’
কলেজেরই এক পড়ুয়ার বাবা, প্রাক্তন সেনাকর্মী বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দা লালমোহন গড়াই জানান, কয়েকদিন ধরেই মেয়ে তাঁকে বিষয়টি জানাচ্ছিলেন। তাঁরও দাবি, ‘‘কারা আবাসিকদের বিব্রত করছে, সেটা খুঁজে বার করে পদক্ষেপ করা দরকার।’’
এ দিকে, হস্টেলের ‘ইন-চার্জ’ শিউলি মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আগে সব ঠিক ছিল। অফলাইনে পরীক্ষা হবে, এই ঘোষণা হতেই এ সব কথা শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে পড়াশোনা করে আসছেন পড়ুয়ারা। হঠাৎ অফলাইনে পরীক্ষা হবে শুনেছেন। পরীক্ষার প্রস্তুতি হয়তো নিয়ে উঠতে পারেননি ওঁরা। তাই পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে এ সব বলা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, তাঁদের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। করলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করবে।
‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চে’র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যুক্তি দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সব কিছু বিচার করতে হবে। ওখানে কী ঘটেছে, আমাদের জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করলে আমরা গিয়ে বিষয়টি কী, তা খতিয়ে দেখব।’’