কালনার ছাড়িগঙ্গায় পাখি গণনা। নিজস্ব চিত্র।
এ বার শীতে ছাড়িগঙ্গায় কমল পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। শনিবার পক্ষীগণনার পরে এমনই মত ওই কাজে যুক্ত কর্মীদের একাংশের। পক্ষীপ্রেমীদের দাবি, এর কারণ প্রশাসনিক উদাসীনতা। ছাড়িগঙ্গা কচুরিপানায় ঢেকে থাকলেও তাসাফ করা হয়নি।
গত বছর পক্ষীগণনায় পাঁচ হাজারের বেশি পাখির দেখা মিলেছিল ছাড়িগঙ্গায়। এ দিন সকাল পক্ষীগণনা শুরু করেন বন দফতরেরকাটোয়া রেঞ্জের দুই কর্মী সৌম্য ঘোষ, রাজেন চন্দ এবং কালনা শহরের পক্ষী বিশেষজ্ঞ নব্যেন্দু পাল। ছিলেন কালনার উপ-পুরপ্রধানতপন পোড়েল। দুপুর পর্যন্ত কাজ চলে। জলাশয় ও তার আশপাশে ৪৭টি প্রজাতির ৩০২৪টি দেশি-বিদেশি পরিযায়ী পাখির দেখামিলেছে বলে তাঁদের দাবি। দুই বনকর্মীর দাবি, ‘‘অনেকটাই কমেছে পাখির সংখ্যা। পাখিরা জলাশয়ে মনের মতো পরিবেশ পাচ্ছে না বলেই আমাদের ধারণা।’’
গণনার সময়ে দেখা যায়, জলাশয়ের বেশির ভাগ অংশ ঢেকে রয়েছে ঘন কচুরিপানায়। ছাড়িগঙ্গার গা ঘেঁষে শুরু হয়েছে ধান চাষ। পাখির ঝাঁক আটকাতে জমি নেট দিয়ে ঘিরে রেখেছেন চাষিরা। কীটনাশক এবং রসায়নিক সার ব্যবহার হচ্ছে চাষে, যা পাখিদের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। কচুরিপানা ঠেলে ছোট নৌকা নিয়ে মাছ ধরছেন কেউ কেউ। নৌকা এগোলেই পাখির দল উড়ে যাচ্ছে।
নব্যেন্দু বলেন, ‘‘এ বার বৃষ্টি কম হয়েছে। কচুরিপানা বেরোতে পারেনি। ফলে পাখিরা অবাধে চরে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে না। পাখিদের ফেরাতে গেলে কচুরিপানা তুলতে হবে।’’ রূপালি মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কালনা শহরে প্রচুর পর্যটক আসেন। ছাড়িগঙ্গা ঘিরে পাখিরালয় গড়ে উঠলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে। প্রশাসনের কর্তারা ছাড়িগঙ্গা পরিদর্শন করলেন। অতচ কচুরিপানা তোলার ব্যবস্থা করলেন না।’’ উপ-পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে কচুরিপানা তোলার চেষ্টা হবে।’’