‘ইন্ডিয়ান পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক’ (আইপিপিবি), এই পরিষেবা শুরু হয়েছিল ২০১৭-র গোড়ায়। উদ্বোধন করেছিলেন দেশের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এ বার এই পরিষেবার মাধ্যমে বাড়িতে বসেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ভাতার টাকা হাতে পাবেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার উপভোক্তারা, জানালেন ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ জানান, এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে উপভোক্তাদের নিজেদের এলাকার ডাকঘরে ‘আমানত বই’ থাকতে হবে। জেলার ১৩৯টি উপ-ডাকঘর থেকে এই সুবিধা মিলবে। পাশাপাশি, যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উপভোক্তারাও এই ব্যবস্থায় বাড়িতে বসেই টাকা তুলতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
জেলার সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পোস্ট অফিস সুভাষ চন্দ্র বারিক জানান, এই পরিষেবার কথা জানিয়ে কী ভাবে মিলবে টাকা, তা-ও জানিয়েছেন। তিনি জানান, নিজেদের এলাকার ডাকঘরকে খবর দিলে তাঁরা ‘মেশিন’ নিয়ে উপভোক্তার বাড়িতে পৌঁছে যাবেন। আঙুলের ছাপ নিয়ে উপভোক্তার পাওনা সংক্রান্ত সব তথ্য মিলিয়ে টাকা দেবেন। সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত মিলবে। প্রতিটি লেনদেনের জন্য ২৫ টাকা করে দিতে হবে। পাশাপাশি, তিনি বলেন, ‘‘উপভোক্তার যদি ডাকঘরে আমানত বই থাকে এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ভাতা সেই বইতে জমা হয়, তা হলে কোনও খরচ ছাড়াই বাড়িতে বসে টাকা তোলা সম্ভব হবে। পশ্চিম বর্ধমানে মার্চ থেকেই এই পরিষেবা চালু হচ্ছে।’’ ডাক বিভাগের কর্তারা জানান, যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরাও এই ব্যবস্থায় টাকা তুলতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে গ্রাহকের আধার নম্বরের সংযোগ থাকতে হবে।
যে ভাবে
• উপভোক্তারা নিজেদের এলাকার ডাকঘরকে খবর দিলে ‘মেশিন’ নিয়ে উপভোক্তার বাড়িতে পৌঁছে যাবেন ডাক বিভাগের কর্মীরা।
• আঙুলের ছাপ নিয়ে উপভোক্তার পাওনা সংক্রান্ত সব তথ্য মিলিয়ে টাকা দেওয়া হবে।
• সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত মিলবে। প্রতিটি লেনদেনের জন্য ২৫ টাকা করে দিতে হবে।
• চলতি মাস থেকেই শুরু হচ্ছে পরিষেবা।
জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্ক না থাকায় টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। নতুন ব্যবস্থায় এই সমস্যারও সমাধান হবে বলে আশা ডাক বিভাগের কর্তাদের। তাঁরা জানান, জেলার আটটি ব্লকের প্রায় ২১ পঞ্চায়েতে কোনও ব্যাঙ্ক নেই। প্রায় আড়াইশো গ্রামের বাসিন্দারা সুবিধামতো ব্যাঙ্ক পরিষেবা পান না। কিন্তু ওই সব এলাকায় ডাকঘর রয়েছে। ফলে, সে সব গ্রামের বাসিন্দারা ডাকঘরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের লেনদেন করতে পারবেন।
এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশও। সালানপুরের ফুলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা নয়নমণি বাউড়ি বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে বার্ধক্য ভাতার টাকা মিলবে জেনে ভাল লাগছে।’’ তবে পাশাপাশি, তাঁরা এ-ও বলেন, পরিষেবা শুরুর পরে কত দিন তা মেলে, তা-ও দেখতে হবে।