কামরুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র
এত দিন বাইরের কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে মুখ থেকে একটা শব্দও বার হত না তার। সেই ‘চেন-খুনি’এখন আদালতে যাওয়া-আসার পথে কাউকে পেলে উগড়ে দিচ্ছে পুলিশের প্রতি ক্ষোভ। একাধিক খুন ও খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত কামরুজ্জামান সরকারের দাবি, পুলিশ তাকে ফাঁসিয়েছে। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, নিজের উপর থেকে শাস্তির চাপ কমাতেই নতুন কৌশল নিয়েছে ধৃত।
কালনা, মন্তেশ্বর, হুগলির একাংশ জুড়ে বাড়িতে একা থাকা একাধিক মহিলাকে খুন, যৌন নির্যাতন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। কয়েক মাস আগে একটি ঘটনা ঘটাতে যাওয়ার পথে ধরা পড়ে যায় সে। ধরা পড়ার পর থেকেই দফায় দফায় জেরা চলছে কামরুজ্জামানের। প্রতি বারই প্রতিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছে সে, দাবি তদন্তকারীদের। এমনকি, কী ভাবে অপরাধ করার পরে পালাত তাও জানিয়েছে। কালনা উপসংশোধনাগারের কর্মীদের দাবি, সেখানে বন্দি থাকার সময়েও খুন করার গল্প শুনিয়েছে সে। তবে ইদানিং বদলে গিয়েছে তার হাবভাব। খুনের গল্প না করে বরং পুলিশ কী ভাবে ফাঁসিয়েছে তা বলছে ধৃত, দাবি কর্মীদের।
মঙ্গলবার আদালতে তোলার পথেও কামরুজ্জমানকে অনর্গল কথা বলতে দেখা যায়। নিজেকে অত্যন্ত গরিব দাবি করে সে জানায়, তার ভাঙাচোরা জিনিস কেনার ব্যবসা রয়েছে। তার দাবি, পুলিশ তার কাছ থেকে একটি লোহার দন্ড উদ্ধার করেছে। যেটি দিয়ে জিনিসপত্র ভেঙে ব্যাগে ভরত। পুলিশ ‘এনকাউন্টার’ ও স্ত্রীকে নির্যাতনের ভয় দেখানোয় সে মুখ খউলতে পারছিল না বলেও কামরুজ্জামানের অভিযোগ।
তদন্তকারীদের অবশ্য দাবি, নানা ঘটনায় যে ভাবে তথ্য প্রমাণ জোগাড় করা চলছে তার টের পেয়েছে ধৃত। শাস্তির ভয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে গিয়ে নানা ফন্দি আঁটছে। ধৃতের হয়ে কোনও আইনজীবী না দাঁড়ালেও তাকে বাইরে থেকে কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, বলে তদন্তকারীদের অনুমান। বুধবার কালনা থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃত বাইরে কী কী কথা বলেছে তার একটি ভিডিয়ো আমাদের হাতে এসেছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ সব জেনে গিয়েছে ভেবে নিজেকে বাঁচাতে পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলছে ধৃত। কিন্তু সব প্রমাণই ওর বিরুদ্ধে।’’