এমন ছবি দেখা যায় অনেক পেট্রল পাম্পেই। নিজস্ব চিত্র
হেলমেট না থাকলে পেট্রল পাম্পে জ্বালানি মিলবে না, বছর চারেক আগে এই নির্দেশ জারি করেছিল প্রশাসন। গোড়ার দিকে কিছু দিন নিয়ম মানা হলেও এখন আর বেশিরভাগ পাম্পেই তা মানা হয় না। হেলমেট ছাড়া পেট্রল না দেওয়ার ব্যাপারে আবার নতুন করে নির্দেশিকা জারি করল পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘মোটরযান আইন ১৯৮৮’-এর ১২৯ নম্বর ধারা অনুসারে, মোটরবাইক চালানোর সময়ে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়া সকলের ক্ষেত্রে হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। মাথায় হেলমেট না থাকলে পরিবহণ দফতর ১৭৭ ধারায় সঙ্গে-সঙ্গে জরিমানা করতে পারে। হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহীকে পাকড়াও করে পুলিশ আদালতেও পাঠাতে পারে। তবে ধরপাকড়ের চেয়ে বেশি জরুরি সচেতনতা গড়া, মনে করেন অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার কর্তা সমীর বসু।
দুর্ঘটনা কমানোর অঙ্গ হিসেবে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় হেলমেট ছাড়া পেট্রল পাম্পে জ্বালানি মিলবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেন তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। কিন্তু বহু পাম্পেই হেলমেট ছাড়া তেল মেলে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার জারি করা নির্দেশিকায় পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক শশাঙ্ক শেঠি জানিয়েছেন, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচিতে হেলমেট না থাকা মোটরবাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, বাইক আরোহীদের একাংশ হেলমেট পরছেন না। তা বন্ধ করার জন্য হেলমেট ছাড়া পেট্রল পাম্পে যাতে তেল না মেলে, ট্র্যাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার, আসানসোল ও দুর্গাপুরের মহকুমাশাসককে তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন জেলাশাসক। দরকার হলে যে সব পাম্প নিয়ম মানছে না তার তালিকা প্রশাসনের কাছে পাঠাতে বলেছেন তিনি। এই নির্দেশ পাম্পগুলিতে ঝুলিয়ে রাখার পরামর্শও দিয়েছেন জেলাশাসক।
নানা পেট্রল পাম্পের মালিকেরা দাবি করেন, হেলমেট না থাকার জন্য তেল দিতে অস্বীকার করলে গোলমাল বাধান অনেক মোটরবাইক আরোহী। অনেক ক্ষেত্রে তাই বাধ্য হয়ে তেল দিয়ে দেন পাম্পের কর্মীরা। জেলাশাসকের পরামর্শ, জোর করে কেউ তেল নিতে চাইলে পুলিশকে অভিযোগ জানাবেন পাম্প মালিকেরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বর্ধমান জোনের সম্পাদক বিশ্বদীপ রায়চৌধুরীর দাবি, কিছু পাম্প নিয়ম মানে না। সে কারণে যে পাম্পগুলি নিয়ম মানে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, ‘‘পথ নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়ম সকলেরই মানা জরুরি।’’