‘সঠিক’ তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভে মৃতের পরিজন এবং স্থানীয়েরা। —নিজস্ব চিত্র।
হোটেলের ঘরে যুবকের রহস্যমৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। পুলিশের দাবি, গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছেন ২১ বছরের রোহনপ্রসাদ রাম। কিন্তু তা মানতে নারাজ মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। ময়নাতদন্তের পর দেহ রাস্তায় ফেলে অবরোধ করলেন তাঁরা। বুধবার এই নিয়েই শোরগোল কুলটি থানার নিয়ামতপুরে জিটি রোডে।
মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোলের কুমারপুরে ‘মনোজ’ প্রেক্ষাগৃহের বিপরীতে একটি হোটেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ২১ বছরের যুবকের। গুলির শব্দ পেয়ে হোটেলকর্মীরা পুলিশে খবর দেন। উদ্ধার হয় দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, ওটা খুন নয়, আত্মহত্যার ঘটনা। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, ওই হোটেলে নানা ‘কুকর্ম’ হয়। এ নিয়ে একাধিক বার প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আর মঙ্গলবার খুন হওয়া যুবকের সঙ্গে হোটেলের একই ঘরে এক তরুণীও ছিল দাবি করেছেন স্থানীয়রা। রোহনের পরিবারের দাবি, ‘‘ওর সঙ্গে হোটেলে একটি মেয়ে ছিল। তাকে কেন পুলিশ এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করল না?’’ তাদের হুঁশিয়ারি, পুলিশ ‘সঠিক ভাবে’ তদন্ত না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
অন্য দিকে, ওই মৃত্যুর ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট হোটেলের ঘরে তদন্তের জন্য ফরেন্সিক দল গিয়েছে। বুধবার চার সদস্যদের সেই দল হোটেলের নানা জায়গা পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে। রুমে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। তারা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ফরেন্সিক দলের সঙ্গে ছিল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ এবং আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। তারা এখনই ওই মৃত্যু নিয়ে কোনও বিবৃতি দিতে চাইছে না। তবে হোটেলের ওই ঘরে যে এক জন তরুণী ছিলেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁর পরিচয় এবং যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে খোঁজখবর চলছে বলে খবর।
বস্তুত, মঙ্গলবার হোটেলের ঘরে যুবকের মৃত্যুর রাস্তা অবরোধ করেছিলেন স্থানীয়রা। এর পর সাময়িক ভাবে ওই হোটেলটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন মালিকপক্ষ। পুলিশ যুবকের মৃত্যুকে প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলে মনে করলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ, কপালে যে গুলি লাগার চিহ্ন রয়েছে, তা দেখে আত্মহত্যা বলে মনে করছেন না তাঁরা। তাই পুলিশ যাতে ‘সঠিক ভাবে’ তদন্ত করে তার দাবি তুলেছেন তাঁরা।