যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সী। —নিজস্ব চিত্র।
অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর হামলায় খুন হলেন বুদবুদের দেবসালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সীর ছেলে তথা যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সী। এই খুনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং বিজেপি-র রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরাই চঞ্চলকে খুন করেছে। তবে শাসকদলের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি-র পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন চঞ্চল। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের কাছে একটি বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে আততারীরা এখনও অধরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পশ্চিম বর্ধমান জেলার বুদবুদে মঙ্গলবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ একটি দলীয় কর্মসূচি সেরে ফিরছিলেন শ্যামল এবং তাঁর ছেলে চঞ্চল (৪০)। অভিযোগ, জঙ্গলের মধ্যে তাঁদের উপর গুলি চালায় মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা। তাতেই ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর দেহ। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চঞ্চল। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলি বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে একটি দলীয় কর্মসূচির পর ভাতকুন্ডা এলাকার কাছে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ফিরছিলেন শ্যামল এবং তাঁর ছেলে চঞ্চল। সেই সময় আচমকাই বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি ছোড়ে। চঞ্চলের গায়ে ৩টি গুলি লাগে। খবর পেয়ে তাঁকে আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের জামতারা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান দলীয় কর্মীরা। সেখানে চঞ্চলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।” হায়দরের দাবি, “যুব তৃণমূলের দেবসালা অঞ্চলের সভাপতি ছিলেন চঞ্চল। দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূল করতেন। বিজেপি-র কিছু লোকই ঈর্ষান্বিত হয়ে এ কাজ করেছে।”
এই খুনের প্রত্যক্ষদর্শী তথা চঞ্চলের বাবা শ্যামল বলেন, “একটি দলীয় কর্মসূচি সেরে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ দুটো মোটরবাইক ওভারটেক করে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। অন্তত পাঁচটা ফায়ার করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কেন আমাদের উপর এই হামলা হল, তা বুঝতে পারছি না।”
এই খুনের ঘটনায় বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। উল্টে এটি শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে দাবি বিজেপি-র। বর্ধমান সদরের বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি রমণ শর্মা বলেন, “দেবসালার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” তাঁর দাবি, “পশ্চিমবঙ্গে যারা রক্তের রাজনীতি আরম্ভ করেছে, আজ তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই গোলাগুলি চলছে। যার মধ্যে পড়ে কমবয়সি ছেলেকে মরতে হচ্ছে। বিজেপি এ ধরনের কাজ করে না। তৃণমূল রক্তের খেলা শুরু করেছে। ওরা নিজেরাই এটা করেছে। বিজেপি-র সঙ্গে এই এ ঘটনার কোনও যোগ নেই।”