শিশিরকুমার মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ফোনে অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভার পুরপ্রধান শিশিরকুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক তরুণীর সঙ্গে এক ব্যক্তির কথোপকথনের অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও ওই অডিয়ো ক্লিপটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই অডিয়ো ক্লিপে যে পুরুষকণ্ঠ শোনা গিয়েছে তার সঙ্গে শিশিরের স্বর প্রক্ষেপণের মিল রয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিশির।
তরুণী এবং পুরুষকণ্ঠের ওই অডিয়ো ক্লিপটি প্রায় ৩০ মিনিটের। বিভিন্ন সময়ে রেকর্ডিং করা ওই ক্লিপটি থেকে জানা যাচ্ছে, তরুণী চাকরিপ্রার্থী। উল্টো প্রান্তে থাকা পুরুষকণ্ঠের অধিকারী কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির কাছে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন ওই তরুণী। অডিয়ো ক্লিপটিতে পুরুষকণ্ঠের অধিকারী ওই তরুণীকে টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দিতে শোনা গিয়েছে। সমাজমাধ্যমে এমন অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ক্লিপ হাতে পাওয়ার পর থেকে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। এ নিয়ে বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন, ‘‘তৃণমূলের কম-বেশি সব নেতাই এই দোষে দুষ্ট। যত দিন যাবে তত এই সব বেরিয়ে আসবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে প্রথম পুরসভার কাউন্সিলর হল শিশির। ২০১৫ সালে আবার দাঁইহাট পুরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে বিরোধী দলনেতা হিসাবে মনোনীত হন তিনি। ২০১৮ সালে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তৎকালীন পুরবোর্ডের পতন ঘটিয়ে দাঁইহাটের পুরপ্রধান হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন শিশির। ২০২২ সালে আবার পুরপ্রধান হন শিশির। তিনি অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবেও কর্মরত ছিলেন দীর্ঘ দিন। শিশির দাবি করেছেন, অডিয়ো ক্লিপে যে পুরুষকণ্ঠ শোনা গিয়েছে তা তাঁর নয়। এমন কোনও অশালীন কাজ করেননি বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ শিশিরের। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে এ নিয়ে সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন শিশির।
এমন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডুর কাছে। এই অভিযোগের কথা তাঁর কানে পৌঁছয়নি বলে জানিয়ছেন দেবু। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কিছু ঘটে থাকলে দল যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। তবে বিরোধীরা যড়যন্ত্র করে এ সব করেছি কি না সেটাও দেখতে হবে।’’