আর জি কর কাণ্ডে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ
R G Kar Hospital Incident

অপরাধ কেউ সমর্থন করে না, দাবি পুলিশের

সমাজমাধ্যম ছেয়ে গিয়েছে স্লোগান-পাল্টা প্রচারে। ‘পুলিশ তুমি চিন্তা করো, তোমার মেয়েও হচ্ছে বড়’র উত্তরে ভাসছে ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

দুর্গাপুর, আসানসোল শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৪
Share:

সমাজ মাধ্যমের সেই ছবি। নিজস্ব চিত্র।

আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা থেকে পুলিশ-বিরোধী স্লোগান উঠেছে। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে সমাজমাধ্যমে নানা পোস্টও হচ্ছে। পাল্টা আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন পুলিশের একাংশ। একাধিক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, অপরাধ কেউ সমর্থন করে না। সাম্প্রতিক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরতেই এই পদক্ষেপ। বিরোধীদের দাবি, সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে পুলিশের এই পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে শাসক দল। মন্তব্যে গুরুত্ব দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

সমাজমাধ্যম ছেয়ে গিয়েছে স্লোগান-পাল্টা প্রচারে। ‘পুলিশ তুমি চিন্তা করো, তোমার মেয়েও হচ্ছে বড়’র উত্তরে ভাসছে ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়’। কেউ আবার তার পরে যোগ করেছেন ‘হচ্ছে বড় ছেলেও তোমার, তার দায়ও কি পুলিশের একার?’ বৃহস্পতিবার সারা রাজ্যের সঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্তাদের অনেকে সমাজমাধ্যমে এমন পোস্ট করেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘পুলিশের মেয়ের নয়, নিজেদের কথা বলুন।’ পুলিশের পোশাক পরতে ‘দম’ লাগে। কেউ লিখেছেন, পুলিশ ভেবে তিনি গর্বিত। কেউ চাইলেই তাঁকে ‘আনফ্রেন্ড’ করতে পারেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনারেটের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আমাদের মেয়েরাও আর পাঁচ জনের মেয়ের মতোই বড় হচ্ছে। তাই স্লোগান দিয়ে আমাদের সে কথা মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। অপরাধ কেউ সমর্থন করে না।” ক্ষোভের সুরে এক পুলিশকর্মী বলেন, “কিছু ঘটলেই পুলিশের খুঁত খুঁজে বার করার জন্য মুখিয়ে থাকেন কেউ কেউ। বিশেষ করে আর জি কর কাণ্ডের পরে পুলিশকে নিয়ে যে স্লোগান তৈরি করা হয়েছে, সেটা এক দিক থেকে পুলিশকে ছোট করার চেষ্টা।”

জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তার প্রকৃত চিত্র সমাজের কাছে তুলে ধরতেই এই পদক্ষেপ।” আর এক পুলিশকর্তার দাবি, একটি বিশেষ শ্রেণি পুলিশকে সমাজের চোখে খলনায়ক করছেন। মিথ্যা অভিযোগের বিপরীতে পুলিশের প্রকৃত ছবি তুলে ধরতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। দুর্গাপুরের এক পুলিশকর্মীর প্রতিক্রিয়া, “এই ঘটনার তদন্ত নিয়ে প্রথম পর্যায়ে কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। সেটাই পরবর্তীতে তিল থেকে তাল হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভের জন্ম দেয় সাধারণের মনে।” পাল্টা প্রতিবাদে নেট-নাগরিকদের অনেকে পুলিশের পাশেও দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

সিপিএম নেত্রী তথা ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের মূল কাজ ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু পুলিশের একাংশ সেই কাজ করছে না। তবে সামগ্রিক ভাবে আমরা হিংসার বিরুদ্ধে।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আর জি কর কাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের মুখ পুড়েছে। এখন নিজেদের ভাবমূর্তি ফেরাতে এ সব শুরু করেছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “পুলিশই তো তদন্ত শুরু করে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ কোনও প্ররোচনা করেনি। তাই
ওদের উপরে আক্রমণ কখনও সমর্থনযোগ্য নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement